ঢাকা: ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে দেশের সমস্ত কার্যক্রম পেপারলেস পলিসিতে করতে হবে। পেপারলেস পলিসি ছাড়া দেশকে শতভাগ ডিজিটাল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না।
রোববার (০৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই সভাপতি একথা বলেন। এসময় তিনি দেশের সমসাময়িক অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ২০২২ সালে ডিসিসিআইর বর্ষব্যাপি কর্ম-পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশ হিসেবে রূপান্তিত করার প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশন-মিশন রয়েছে, তা বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের সমস্ত কার্যক্রম পেপারলেস পলিসিতে আনতে হবে। অথাৎ সরকারকে একটি পেপারলেস কোম্পানিতে পরিনত হতে হবে। আমরা উদাহারণ হিসেবে দেখতে পারি যে, ইউরোপিয় ইউনিয়নে (ইইউ) এই করোনার মধ্যে তাদের সমস্ত কার্যক্রম পেপারলেস পলিসিতে হয়েছে। এমনকি সেখানে যদি কোন সরাকারি কর্মকর্তার হাতে কাগজ দেখা গেছে, তাকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশন হতে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে আমাদেরকে এলডিসি পরবর্তীর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর বিশ্বে আর হাত পেতে নেয়ার দেশ থাকবো না। বরং আমরা বিশ্বকে দেয়ার মতো অবস্থানে পরিনত হবো। তখন আমাদেরকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আর এজন্য আমাদের অবস্থান ও কার্যক্রমেও ডিজিটালের ছাপ বহন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে বর্তমানে প্রায় ১৭ কোটি ২০ লাখ মোবাইল ব্যবহারকারী রয়েছে। এদের মধ্যে ১২ কোটি ১০ লাখেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। বিশ্ববাসীর কাছে এখন আমাদের কৃষিকে ব্যান্ডিং করার সময় নয়। দেশে বিদেশি ব্যবসায়ীদেরকে ভিড়াতে এখন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করার সময় এসেছে। কিন্তু আমাদের দেশে গবেষণার অভাব থাকায় বিশ্ববাসীর কাছে আমরা তা সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারছি না।
আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে ট্যাক্স আলোচনায় তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে মাত্র ২৪ লক্ষ মানুষ ট্যাক্স দিয়ে থাকে। বাংলাদেশে ট্যাক্সের গড় হার ৩০ শতাংশ। অথচ এশিয়ায় ট্যাক্সের গড় হার ২১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গ্লোবালি ট্যাক্সের গড় হার ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে ট্যাক্সের হার ২৯ শতাংশ। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ডে ২০ শতাংশ। বাংলাদেশের এই ট্যাক্সের গড় হার কমিয়ে ২৫ শতাংশে আনা উচিত। যদিও তা একদিনে সম্ভব না, ধারাবাহিকভাবে কয়েক বছরের মধ্যে কমানো উচিত।
সিএমএসএমই নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, দুর্বল ব্যবসায়ীদের টেনে তুলতে হলে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্পকে দুটি ভাগে ভাগ করা উচিত। যেটা আমরা (ডিসিসিআই) এর আগেও বলেছিলাম। এই সেক্টরটাকে ভাগ করে অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে একটি সেক্টরে রেখে মাঝারি শিল্পকে আলাদা করে দেয়া উচিত। কেননা এই শিল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা সুযোগ-সুবিধার বেশিরভাগই ভোগ করে থাকে মাঝারি উদ্যোক্তারা।
সোনালীনিউজ/এমএইচ