ঢাকা : চলতি বছরেই ট্রেজারি বন্ড লেনদেন শুরু হলে পুজিবাজারের গ্রোথ বাড়ার পাশাপাশি জিডিপিতে অবদান বাড়বে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, কিছুদিন পর যদি আমরা সব ধরণের বন্ড ট্রেড শুরু করবো তখন তো মার্কেট ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। আর সেটা চলতি বছরেই দেখতে পাবেন।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় হোটেল ওয়েষ্টিনে সিএমজেএফ ও বিএমবিএ যৌথভাবে আয়োজিত 'বাংলাদেশের পুঁজিবাজার: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা যদি অন্য কোন দেশের সঙ্গে তুলনা করি, তখন অবশ্যই সেই দেশের সার্বিক অবস্থার দিকে তাকাতে হবে প্রথমেই। তারপরও বিভন্ন দেশেই খারাপ কিছু অতালিকাভুক্ত হয়, আবার তারা একটা সময় টিকে থাকতে না পেরে তালিকাচ্যুতও হয়। আমরা যদি ডেরিভেটিভ মার্কেটের কথা বলি, তাহলের লোকের বিষয়টা তো দেখতে হবে, কিন্তু আমাদের দেশে তো ডেরিভেটিভ মার্কেট সম্পর্কে কারো ভালো ধারণা নেই।
তিনি বলেন, আমাদের ১৮টি বন্ধ কোম্পানি ইতোমধ্যে পুনরায় চালু হয়েছে। এই কোম্পানিগুলোর ব্যাংকের যে ঋণ ছিলো সেগুলো পরিশোধের একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে করে ব্যাংকগুলো লাভবান হয়েছে। এছাড়াও এনবিআরও লাভবান হবে কারণ এখান থেকে বড় একটা টেক্স পাওয়া যাবে। তাই আমরা এনবিআরের সহযোগিতাও আমাদের প্রয়োজন।
শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জে কেবল বাংলাদেশি পণ্য না, বিদেশি পণ্য কেনাবেচা হবে। কৃষকের ধান উত্তোলনের আগেই এখানে কেনা বেচা হবে। এর সফটওয়ার যদি কিনতে যাই, তাহলে প্রায় ১০০ থেকে দেড়শ কোটি টাকা লাগবে, আর একটু ভালো সফটওয়্যার যদি কিনতে চাই তাহলে লাগবে সোয়া ৪০০ কোটি টাকা। আমরা এত বড় প্রকল্প নিযে কাজ করছি, শিগগিরই এগুলো শুরু হলে মার্কেটের সাইজ অনেক বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটকে যত সহায়তা দেয়া হোক না কেন, তত ট্যাক্স বাড়বে দেশের। ভালো কোম্পানি যদি এখানে আনা হয়, তাহলে তারা ট্যাক্স ফাকি দেয়ার সুযোগ পাবে না।শর্ট সেল নিয়ে আমাদের কাজ করার চিন্তা আছে। আগে সিসিবিএল চালু হওয়ার পর আমাদের শর্ট সেল চালু করার চিন্তা রয়েছে। কেননা শর্ট সেলের জন্য ট্রেডিং ক্যাপাসিটির উন্নয়ন দরকার।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মিউচুয়াল ফান্ড রিসেন্ট সিসিউশন খুবই ভালো, তারা ডিভিডেন্ডও দিতে শুরু করছে। না দিলে তাদের ডেকে কারণ দর্শন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যে রোড শোগুলো করেছি, এটা মূলত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই যাচ্ছি। এটার সুফলও আমারা পেতে শুরু করছি। সামনেও কয়েকটি দেশে আমরা রোড শো করবো। মূলত রোড শোর মাধ্যমে যখন আমরা আমাদের পণ্যগুলো বিদেশে ব্রান্ডিং করি তখন তারা এখানে বিনিয়োগ করার ব্যপারে আগ্রহী হয়ে উঠে, কেননা রোড শোতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকরা আমাদের সঙ্গে উপস্থিত থাকে। তাদের সুন্দর উপস্থাপনের বিদেশিরা আগ্রহী হয়।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ)সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএ'র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান সিএফএ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের চেয়ারম্যান, সাবেক মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মো: জাহিদ হাসান, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খায়রুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আল-আমিন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও, সিএফএ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ডনার শাহীন ইকবাল, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর প্রেসিডেন্ট মামুনুর রশীদ এফসিএমএ, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ বাংলাদেশ (আইসিএসবি) এর প্রেসিডেন্ট মোজাফফর আহমেদ এফসিএমএ এফসিএস, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বাংলাদেশ (আইসিএবি) এর কাউন্সিল সদস্য গোপাল চন্দ্র ঘোষ।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ