অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটি শীর্ষক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৩, ০৮:৫৪ পিএম

ঢাকা: দি ইন্সটিটিউট অব চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি), ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটন, নিউজিল্যান্ড এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিঃ যৌথভাবে আয়োজিত “অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটিঃ ইমপ্লিমেন্টেশন প্রগ্রেসেস” শীর্ষক কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে৷

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) আইসিএবি অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ড. মোঃ খায়রুজ্জামান মজুমদার এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু৷

এসময় অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন আইসিএবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুভাশীষ বসু এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আইসিএবির প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান এফসিএ৷

আইসিএবির প্রেসিডেন্ট সবাইকে‌ স্বাগত জানিয়ে বলেন, আমাদের ব্যবসা ও অর্থনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপট ও অবস্থায় অ্যাকাউন্টবিলিটি ও সাসটেইনেবিলিটি একটি বড় ভূমিকা রাখছে। জবাবদিহিতা এবং স্থায়িত্ব  নিশ্চিতে আমাদের যে প্রতিশ্রুতি ছিল তার যে অগ্রগতি হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য দিতে চাই। একটি জাতির জন্য আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগতভাবে উন্নতি লাভ করা। সেই সঙ্গে দেশের সব নাগরিকদের মধ্যে সুবিধাগুলো সমানভাবে ভাগের নিশ্চিত করা।

মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা যেভাবে অ্যাকান্টিবিলিটি এবং সাসটেইনেবিলিটিতে কাজ করে এতে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব একটি বড় পরিবর্তন দেখেছে। সরকার থেকে শুরু করে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত, আমাদের কার্যক্রম আজকের এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের মঙ্গলকে অনেক প্রভাবিত করবে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব বলতে একটি প্রতিষ্ঠান বা জাতির দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তৈরি করা অনুশীলনগুলোকে বোঝায় এবং এর কার্যক্রমের পরিবেশগত, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিকগুলোকে পরিচালনা করে। এতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঠিক রেখে পরিবেশ এবং মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে মুনাফা তৈরিতে কাজ করে।প্রতিবেদনে স্থায়িত্বের তথ্য নিশ্চিতের মাধ্যমে ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল অর্থনীতির দিকে উত্তরণে বিনিয়োগকারী, দাতা এবং স্টেকহোল্ডারদের আকৃষ্ট করবে। সেই সঙ্গে স্টেকহোল্ডার এবং বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ইত্যাদির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে আস্থা তৈরি করবে ও দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখবে।

পরে “অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যান্ড সাসটেনেবিলিটিঃ ইমপ্লিমেন্টেশন প্রগ্রেসেস” শীর্ষক কনফারেন্স মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউজিল্যান্ড এর ওয়েলিংটন স্কুল অফ বিসনেস এন্ড গভর্নমেন্ট, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েলিংটন এর একাডেমিক প্রোগ্রাম লিডার ড. ইয়াংনকা মোজেস৷ মুল প্রবন্ধে তিনি বলেন, সব অংশীজন‌দের স্বার্থ রক্ষা ক‌রে আর্থিক প্রতি‌বেদন তৈ‌রির মাধ্যমে হিসাবের ক্ষে‌ত্রে জবাব‌দি‌হিতা নি‌শ্চিত করা যায়। দেশ, সমাজ ও কোম্পা‌নির উপর ইতিবাচক ও নে‌তিবাচক প্রভা‌বের বিষয়‌টি মাথায় রে‌খে প্রতি‌বেদন তৈ‌রি কর‌তে হ‌বে। কোম্পা‌নির ব্যবস্থাপক‌দের শুধু মুনাফা করলেই হ‌বে না, একইস‌ঙ্গে নতুন কর্মসংস্থান সৃ‌ষ্টি ও উপযুক্ত জীবনমান নি‌শ্চিত করার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পদ‌ক্ষেপ নি‌তে হ‌বে।

কনফারেন্সে সম্মানিত অতিথি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, যে কোন উন্নয়ন দীর্ঘস্থায়ী না হলে সেটিকে প্রকৃত উন্নয়ন বলা যায় না৷ তাই টেকসই উন্নয়ন প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ জাতিসঙ্গের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) হল ১৭টি লক্ষ্যের একটি৷ যার লক্ষ্য হল ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্রের অবসান, পৃথিবীকে রক্ষা করা এবং সবার জন্য সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা৷ এটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত যে, এসডিজি প্রণয়নে পেশাদার হিসাবরক্ষকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ পেশাদার হিসাবরক্ষক ব্যবসায়ের এসডিজির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে নৈতিক অনুশীলনকে উত্সাহিত করতে এবং এসডিজি-এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করতে সহায়তা করতে পারে৷

ডিএসইর চেয়ারম্যান ড. হাসান বাবু আরো বলেন, অ্যাকাউন্টিবিলিটি ও সাসটেইনেবিলিটি শব্দ দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো সংস্থার স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করতে হলে এ দুটি বিষয় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে একটি প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ পরিকল্পনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য অ্যাকান্টিবিলিটির গুরুত্ব অনেক। বর্তমানে সব সংস্থা উন্নয়নের জন্য সাসটেইনেবল রিপোর্ট নিশ্চিতের কাজ করছে। আর এর জন্য প্রয়োজন পেশাদার ব্যাক্তির। যেখানে আইসিএবি একি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ও উত্পাদন কিভাবে টেকসই হতে পারে সে বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞ ব্যাক্তি কাজ করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ডিজিটাল লক্ষ্য বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য হাতে নিয়েছে। এসডিজির যে ১৭ লক্ষ্য আছে তার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে সাসটেইনেবল উন্নয়ন। এসডিজির আগে দেশে উন্নয়ন হলেও টেকসই উন্নয়ন হয়নি। আজ ডিএসই, আইসিএবি এবং ভিকটরি ইউনিভার্সিটি যে অনুষ্ঠান করছে তা খুবই সময়োপযোগী এবং এর মাধ্যমে শুধু টেকসই সমাজ নয়, সাথে দেশের জন্যও কাজে আসবে।

তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে৷ দি ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ বাংলাদেশ একটি জাতীয় পেশাদার অ্যাকাউন্টিং সংস্থা৷ যা টেকসই উন্নয়নে পেশাদারদের নৈতিক চর্চাকে উত্সাহিত করে কর্পোরেট কার্যক্রমের সাথে টেকসই উদ্যোগকে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে৷

এআর