ঢাকা: রমজান এলেই বাজারে চাহিদা বাড়ে ইসবগুলের ভুসির। ইফতারে এই পানীয় দিয়ে রোজা ভাঙতে পছন্দ করেন রোজাদাররা।
স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে এই পণ্যটি অনেক উপকারীও। তবে এবার রোজার আগেই প্রতিনিয়ত দাম বেড়েছে শরবতে ব্যবহৃত ইসবগুলের ভুসির।
বিক্রেতারা বলছেন, গত রমজানের পর থেকেই একটু একটু করে প্রতিনিয়ত দাম বেড়েছে ইসবগুলের ভুসির। গত ৬ মাসের ব্যবধানের রাজধানীর বাজারগুলোতে শরবতে ব্যবহৃত এই পণ্যটির দাম কেজিতে প্রায় ৫০০-৬০০ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তারা আমদানি খরচ বৃদ্ধি, ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানো, ডলার সংকটে সরবরাহ ঘাটতির কথা বলছেন।
সোমবার (১১ মার্চ) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি, খুচরা ও ভ্যান বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
[219296]
বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি ইসবগুলের ভুসি মানভেদে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা ৬ মাস আগে ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা ছিল। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ইসবগুলের ভুসি ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা ৬ মাস আগে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা ছিল। আর রাস্তার ওপর ভ্যানে করে প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যা মাস ছয়েক আগে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতো।
ইসবগুলোর ভুসির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ফুটপাতের বিক্রেতা কাদের বলেন, আমরা তো পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনি। দাম বাড়ার কারণ জানি না। যতদূর শুনেছি সরকার নাকি এর ওপর ভ্যাট বাড়িয়েছে৷ এজন্য গত রমজানের পর থেকে দাম বাড়ছে।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের খুচরাবিক্রেতা আব্দুস সোবহানও একই কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় ইসবগুলের ভুসির দাম বেড়েছে। এই পণ্যটি ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। ডলার সংকটে আগের মতো আমদানি না থাকায় সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার ওপর পণ্যটির ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়িয়েছে সরকার। তাই দাম বেড়েছে।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের পাইকারিবিক্রেতা শরীয়তপুর স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. আখতার বলেন, আমরা পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার থেকে ইসবগুলের ভুসি নিয়ে আসি। আমদানিকারকরা বলছেন, এর ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স দ্বিগুণ করা হয়েছে। তাই দাম বেড়েছে।
এদিকে ক্রেতারা বলছেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো এখনো নিত্য ব্যাপার হয়ে গেছে। বিক্রেতারা রমজানের দুই-তিন মাস আগেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন৷ যাতে কেউ বলতে না পারে, রমজানে দাম বেড়েছে।
রবিউল নামের এক ক্রেতা বলেন, ইসবগুলের ভুসি তো অনেক কেনা হয় না। সামান্য সামান্য করে কেনা হয়৷ তাই দাম বৃদ্ধির বিষয়টি চোখে পড়ে না। কিন্তু কেজিতে কিনতে গেলে বোঝা যায় দাম কত বেড়েছে। শুধু ইসবগুলের ভুসিই না, বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বেশি। কিন্তু সরকার কিছু করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, এক সময় ব্যবসায়ীরা রমজানের আগমুহূর্তে দাম বাড়াতেন। এটি নিয়ে সবাই সরব হতো। তাই তারা এখন রমজানের ২-৩ মাস আগেই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়৷ আর রমজান এলে দু-এক টাকা আবার কমিয়ে দেয়। যাতে কেউ বলতে না পারে, দাম বেড়েছে৷ এটা ব্যবসায়ীদের নতুন কৌশল।
মিতু নামের আরেক গৃহিণী বলেন, ২ মাস আগে ১৮০০ টাকা করে ইসবগুলের ভুসি কিনেছি। আজকে ২১০০ টাকা চাচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষ যে কীভাবে চলছি, সেটা শুধু আমরাই জানি। এক কেজির জায়গায় এখন আধাকেজি কিনি। তারপর কষ্ট হয়ে যায়।
এমএস