জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পেল ৭৭ প্রতিষ্ঠান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম

ঢাকা: বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য ৭৭টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান করা হয়েছে।

রোববার (১৪ জুলাই) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এসব প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি প্রমুখ।

৭৬ প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় রপ্তানি পদক ও একটি প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি পদক দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।

জাতীয় রপ্তানি ট্রফি নীতিমালা-২০১৩ অনুসরণে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত বাছাই কমিটির মাধ্যমে মোট ৩০ খাতের রপ্তানিকারকদের মধ্য থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য রপ্তানি আয়, আয়গত প্রবৃদ্ধি, নতুন পণ্যের সংযোজন, নতুন বাজারে প্রবেশ, কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন ইত্যাদি মূল্যায়নপূর্বক ট্রফি বিজয়ী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করেছে। এছাড়া জাহাজ ক্যাটাগরিতে কোনো আবেদন না পাওয়া ও ফুল-ফলিয়েজ ক্যাটাগরিতে একমাত্র আবেদন করা প্রতিষ্ঠানটি ঋণখেলাপি হওয়ায়- এই দুই ক্যাটাগরিতে কোনো পদক দেওয়া হয়নি।

প্রতিটি খাতের জন্য কৃতি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সব খাতের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি শিরোনামে একটি বিশেষ ট্রফিসহ (স্বর্ণ) মোট ২৯টি স্বর্ণ, ২৭টি রৌপ্য এবং ২১টি ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হয়েছে।

যারা পেল ট্রফি
গত ফেব্রুয়ারিতে এ ট্রফির জন্য গেজেট প্রকাশ করা হয়। যেখানে মনোনীত প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই গেজেটে বলা হয়, দেশের সেরা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু রপ্তানি ট্রফি (স্বর্ণ) পেয়েছে রিফাত গার্মেন্টস।

এছাড়া স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ এ তিন ক্যাটাগরিতে জাতীয় রপ্তানি ট্রফির জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো তৈরি পোশাক খাতে (ওভেন) উইন্ডি অ্যাপারেলস স্বর্ণ, অ্যাপারেল গ্যালারি রৌপ্য এবং চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলস ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে। তৈরি পোশাক খাতে (নিটওয়্যার) লিবার্টি নিটওয়্যার স্বর্ণ, ডিভাইন ইন্টিমেটস রৌপ্য, ফ্লামিংগো ফ্যাশনসকে ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

সব ধরনের সুতা খাতে বাদশা টেক্সটাইলস স্বর্ণ, স্কয়ার টেক্সটাইলস রৌপ্য এবং কামাল ইয়ার্ন ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। টেক্সটাইল ফেব্রিকস খাতে নাইস ডেনিম মিলস স্বর্ণ, হা-মীম ডেনিম রৌপ্য এবং ফোর এইচ ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

হোম ও স্পেশালাইজড টেক্সটাইল খাতে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস স্বর্ণ, মমটেক্স এক্সপো রৌপ্য এবং এসিএস টেক্সটাইলস (বাংলাদেশ) ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। টেরিটাওয়েল খাতে নোমান টেরিটাওয়েল মিলস স্বর্ণ এবং এসিএস টাওয়েল রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে। হিমায়িত খাদ্য খাতে ছবি ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ স্বর্ণ, প্রিয়াম ফিশ এক্সপোর্ট রৌপ্য এবং এমইউসি ফুডস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। কাঁচা পাট খাতে পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ স্বর্ণ, তাসফিয়া জুট ট্রেডিং রৌপ্য এবং ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্সকে ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

পাটজাত দ্রব্য খাতে জনতা জুট মিলস স্বর্ণ এবং আকিজ জুট মিলস রৌপ্য ট্রফি; চামড়াজাত পণ্য খাতে পিকার্ড বাংলাদেশ স্বর্ণ এবং এবিসি ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ রৌপ্য ট্রফি; ফুটওয়্যার খাতে বে-ফুটওয়্যার স্বর্ণ, এডিসন ফুটওয়্যার রৌপ্য এবং এফবি ফুটওয়্যার ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। কৃষিজ পণ্য খাতে (তামাক ব্যতীত) ইনডিগো করপোরেশন স্বর্ণ, মনসুর জেনারেল ট্রেডিং কোং রৌপ্য এবং সিএসএস ইন্টারন্যাশনালকে ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

অ্যাগ্রোপ্রসেসিং পণ্য খাতে (তামাকজাত পণ্য ব্যতীত) হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো স্বর্ণ, প্রাণ অ্যাগ্রো রৌপ্য এবং প্রাণ ফুডস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। হস্তশিল্পজাত পণ্য খাতে কারুপণ্য রংপুর স্বর্ণ, বিডি ক্রিয়েশন রৌপ্য এবং ক্লাসিক্যাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্টসকে বিডি ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

মেলামাইন খাতে ডিউরেবল প্লাস্টিক স্বর্ণ ট্রফি; প্লাস্টিক পণ্য খাতে অলপ্লাস্ট বাংলাদেশ স্বর্ণ, আকিজ বায়াক্স ফিল্মস রৌপ্য এবং বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। সিরামিক সামগ্রী খাতে শাইনপুকুর সিরামিকস স্বর্ণ, আর্টিসান সিরামিকস রৌপ্য এবং প্রতীক সিরামিকসকে ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে এমঅ্যান্ডইউ সাইকেলস স্বর্ণ, মেঘনা বাংলাদেশ রৌপ্য এবং রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস পণ্য খাতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি স্বর্ণ এবং বিআরবি কেবলকে ইন্ডাস্ট্রিজ রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে।

অন্যান্য শিল্পজাত পণ্য খাতে মেরিন সেফটি সিস্টেম স্বর্ণ, এশিয়া মেটাল মেরিন সার্ভিস রৌপ্য এবং তাসনিম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স ব্রোঞ্জ ট্রফি; ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস স্বর্ণ, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস রৌপ্য এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসকে ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

কম্পিউটার সফটওয়্যার খাতে সার্ভিস ইঞ্জিন স্বর্ণ এবং গোল্ডেন হারভেস্ট ইনফোটেক রৌপ্য ট্রফি; ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন (সি ক্যাটেগরি) তৈরি পোশাক শিল্প খাতে (নিট ও ওভেন) ইউনিভারসেল জিন্স স্বর্ণ, প্যাসিফিক জিন্স রৌপ্য এবং শাশা ডেনিমস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

প্যাকেজিং ও অ্যাকসেরিজ পণ্য খাতে স্বর্ণ, মনট্রিমস রৌপ্য এবং ইউনিগ্লোরি পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিংকে ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

অন্যান্য প্রাথমিক পণ্য খাতে হেয়ার স্টাইল ফ্যাক্টরি স্বর্ণ ট্রফি, রায় ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল রৌপ্য ও ইকো ফ্রেশ ইন্টারন্যাশনাল ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। অন্যান্য সেবা খাতে এক্সপো ফ্রেইট স্বর্ণ ট্রফি এবং মীর টেলিকম রৌপ্য ট্রফি পেয়েছে।

জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পেয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সাত প্রতিষ্ঠান। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী, আরএফএল গ্রুপের এমডি রথীন্দ্র নাথ পালসহ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে এসব ট্রফি গ্রহণ করেন।

অ্যাগ্রোপ্রসেসিং (তামাকজাত পণ্য ব্যাতীত) ক্যাটাগরিতে প্রাণ-আরএফএলের প্রতিষ্ঠান সবগুলো পুরস্কার অর্জন করেছে। এই ক্যাটাগরিতে স্বর্ণ পেয়েছে হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো লিমিটেড, রোপ্য পেয়েছে প্রাণ অ্যাগ্রো লিমিটেড ও ব্রোঞ্জ পেয়েছে প্রাণ ফুডস লিমিটেড।

মেলামাইন ক্যাটাগরিতে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ডিউরেবল প্লাস্টিক লিমিটেড পেয়েছে স্বর্ণ। আর প্লাস্টিক ক্যাটাগরিতে অলপ্লাস্ট বাংলাদেশ লিমিটেড স্বর্ণ ও বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। এছাড়া লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাটাগরিতে রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে।

আইএ