ঢাকা: অনলাইন নিউজ পোর্টাল সোনালী নিউজ ডটকম-এ গত ১৫ আগস্ট প্রকাশিত ‘জহির উদ্দিনের পাওনা না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা: আইডিআরএ’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
বুধবার (২১ আগস্ট) কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো এক চিঠির মাধ্যমে কোম্পানি মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুল আমিন এই প্রতিবাদ জানান।
মোহাম্মদ সাইদুল আমিন প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সোনালী নিউজে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি আমাদের গোচরীভূত হয়েছে। প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এবং কোম্পানির সম্মানিত পরিচালক মহোদয়গণসহ কতিপয় সিনিয়র কর্মকর্তাদের নামে কোম্পানির সাবেক অবসায়নকৃত/অব্যাহতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মো. জহির উদ্দিনের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা কোম্পানির জন্য অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক বটে। জনাব মো. জহির উদ্দিন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের মাধ্যমে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন যার কোনো সত্যতা নেই। অধিকন্তু কোম্পানির কোনো কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ বা যাচাই-বাছাই না করে শুধুমাত্র একজন অভ্যসগত অপরাধী, অর্থলোপাটকারী ও মুখোশধারী একাধিক কোম্পানি হতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাজানো ঘটনার উপরেই কাল্পনিক বিষয়ের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।’
‘প্রকৃত সত্য ঘটনা হলো, সাবেক অবসায়নকৃত/অব্যাহতি প্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মো. জহির উদ্দিনকে আর্থিক অনিয়ম এবং অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডের সত্যতা পাওয়ায় বিগত ৩১ জুলাই, ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে অত্র কোম্পানির চাকরি থেকে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। তাকে প্রগ্রেসিভ লাইফ থেকে অবসান/অব্যাহতি প্রদান করার পর থেকেই ব্যক্তিগত আক্রোশবশত কোনো প্রকার দালিলিক প্রমাণ ব্যতীত কোম্পানির বিপক্ষে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যাচার করছেন যা অত্যন্ত ঘৃনিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আইন বহির্ভূত আমরা যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
‘এই বিষয়ে প্রগ্রেসিভ লাইফের বক্তব্য হলো- সাবেক কোম্পানি সচিব মো. জহির উদ্দিন সচিব পদ ব্যতীত নিয়ম বহির্ভূতভাবে কোম্পানির আরও ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন এবং তার বিরুদ্ধে অর্থ-আত্নসাতের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। কোম্পানির হিসাব-নিকাশ ও দেনা-পাওনা নিস্পত্তি সাপেক্ষে ছাড়পত্র গ্রহণের জন্য তাকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া সত্বেও তিনি কোম্পানির সঙ্গে যোগযোগ না করে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছেন এবং কোম্পানির বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলাও করেছেন। উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপোষ মীমাংসার ভিত্তিতে জনাব জহির উদ্দিন কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলাসমূহ প্রত্যাহার করে নিবেন মর্মে তার যুক্তিসঙ্গত পাওনাদি পরিশোধ সাপেক্ষে অবমুক্তির সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।’
‘অদ্যাবধি তিনি কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাসমূহ প্রত্যাহার না করে এবং কোম্পানির সাথে কোনরূপ যোগাযোগ না করে মিথ্যা ও মনগড়া বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, মো. জহির উদ্দিন কর্তৃক কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা সমূহ মিথ্যা ও বানোয়াট প্রমাণিত হওয়ায় অধিকাংশ মামলা সমুহ আদালত কর্তৃক ভৎসনা সাপেক্ষে মামলাগুলো (সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলা নং-১৫৩/২০২৩ এবং সিআর মামলা নং-৩৮২/২০২৪) খারিজ করে দেন। তিনি সর্বত্রই নিজেকে কোম্পানির সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালনক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দাবি করেন যা তার স্বঘোষিত এবং কোনো প্রকার দালিলিক প্রমাণ নেই। এই সকল পদবীর ক্ষেত্রে এনআরসি কমিটি, এক্সিকিউটিভ কমিটি ও বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত এবং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমোদন নেই।’
প্রোগ্রেসিভ লাইফের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ ১৫ আগস্টের চিঠিতে যা বলেছিলো-
কোম্পানির সাবেক সচিব মো. জহির উদ্দিনের আর্থিক পাওনাদি পরিশোধের বিষয়ে কোম্পানির ব্যাখ্যা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের হস্তগত হয়। উক্ত ব্যাখ্যার স্বপক্ষে কোম্পানি কোনো প্রমাণক দাখিল করতে পারেনি বিধায় জবাবটি গ্রহণযোগ্য নয়। কোম্পানি কর্তৃক এমন কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রতিপালন না করে কালক্ষেপন করা, যা কর্তৃপক্ষের ন্যায়সঙ্গত নির্দেশ অমান্যের সামিল। কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে এমন কার্যক্রমের দায় আপনার উপর বর্তাবে।
এতে বলা হয়, কোম্পানির সাবেক সচিব মো. জহির উদ্দিন থেকে প্রাপ্ত কাগজপত্রাদি পর্যালোচনায় তার দাবীর স্বপক্ষে আইনানুগ ভিত্তি রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। এমতাবস্থায়, শুনানিতে গ্রহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মো. জহির উদ্দিনের আইনসঙ্গত ও যৌক্তিক পাওনাদি পরিশোধপূর্বক ছাড়পত্র প্রদান করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
‘জহির উদ্দিনের পাওনা না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা: আইডিআরএ’ শীর্ষক সংবাদটি জহির উদ্দিনের বরাত দিয়ে করা হয়নি; বরং গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) আইডিআরএ’র পরিচালক (উপ-সচিব) মোহা. আব্দুল মজিদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠির (স্মারক নম্বর- ৫৩.০৩.০০০০.০৭১.২৭.০০৩.২৪.৩) বরাত দিয়ে করা হয়েছে। তাই সংবাদের তথ্যকে ‘অব্যাহতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাজানো ঘটনার উপরেই কাল্পনিক বিষয়ের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে’ বলার কোনো সুযোগ নেই।
সংবাদসূত্র যে শতভাগ আইডিআরএ’র একটি চিঠি তা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুল আমিন অনুধাবন করতে পারেননি। যেহেতু আইডিআরএ’র চিঠিকে সূত্র ধরে সংবাদ করা হয়েছে তাই কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি ছিলো না বলে মনে করেন এই প্রতিবেদক।
তাছাড়া প্রগ্রেসিভ লাইফ কীভাবে জহির উদ্দিনকে অবসায়ন/অব্যাহতি দিয়েছে তা প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয় ছিলো না। তাই প্রতিবাদলিপিতে এ সংক্রান্ত যে বক্তব্য রয়েছে তার দায় সোনালী নিউজের নয়।
এছাড়াও ব্যক্তিগত আক্রোশবশত কোনো প্রকার দালিলিক প্রমাণ ব্যতীত কোম্পানির বিপক্ষে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদ মাধ্যমে জহির উদ্দিন যদি মিথ্যাচার করে থাকেন তার দায় জহির উদ্দিনের নিজের। এখানে সোনালী নিউজের কোন দায় নেই।
[229787]
এএইচ/আইএ