সিএমএসএমই বান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আহ্বান ঢাকা চেম্বারের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪, ০৬:১২ পিএম

ঢাকা: ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, দেশের জটিল রাজস্ব কাঠামোর জন্য আমাদের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারী খাতের উদ্যোক্তাবৃন্দ ব্যবসা পরিচালনায় নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাই এখাতের উদ্যোক্তাদের বিকাশে সহায়ক এবং সহজ রাজস্ব কাঠামো প্রণয়নের উপর জোরারোপ করেন। বিদ্যমান কর হার না বাড়িয়ে, করজাল সম্প্রসারণের উপর তিনি জোরারোপ করেন। 

ডিসিসিআই'র সভাপতি আশরাফ আহমেদ গত ০৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ-এর সাথে রাজস্ব ভবনে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, বর্তমান আইনে ব্যবসায়িক ক্ষতিকে অন্যান্য ব্যবসায়িক উৎসের আয়ের সাথে সমন্বয় করতে না পারলে ব্যবসায়ীদের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা আরোপিত হচ্ছে, এ লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৩৭-এর অনুরূপ বিধান পুনর্বহালের প্রস্তাব করেন। কর প্রদান ও কর সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি সহজীকরণের লক্ষ্যে আয়কর ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার উপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। 

উৎসে করকে এই মুহূর্তে অগ্রিম করের কিস্তির সাথে সমন্বয় করা না হলে, এমএসএমই কর্তৃক প্রদানকৃত পণ্য ও সেবার পরিশোধকৃত অর্থের থেকে কর্তনকৃত উৎসে করকে পরবর্তী কর বছরে আয়করের সাথে ক্যারি-ফরওয়ার্ড করার সুযোগ প্রদানের বিধান রাখার আহ্বান জানান আশরাফ আহমেদ। 

[231191]

তিনি উল্লেখ করেন, পণ্যের বিবরণ সঠিক থাকলেও এইচএস কোডে ভুল থাকার কারণে ৪০০% পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে, যার ফলে ব্যবসায়ীদের অনেকসময় হয়রানির সম্মুখিন হতে হয়, এমতাবস্থায় পণ্যের বিবরণ এবং এইচএস কোডের যে কোন একটি সঠিক থাকলে কাস্টমস আইন ২০২৩-এর ৮৬(১) ধারা সংশোধন করে এসেসমেন্ট পর্যায়ে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণার সংশোধন ও প্রত্যাহারের সুযোগ প্রদানের আহ্বান জানান।

এনবিআর’র চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ বলেন, আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫% লোক রাজস্ব প্রদান করে, যেখানে ভারতে এ হার ২৩% এবং বিদ্যমান বাস্তবতায় রাজস্ব আহরণের হার বাড়াতে নিজেদের করজাল সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি অভিমত জ্ঞাপন করেন। 

রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমাদের মোট রাজস্বের সিংহাভাগই আসে বিদ্যমান করদাতাদের কাছ থেকে এবং সমাজের একটি বড় অংশই করজালের বাইরে থেকে যাচ্ছে, ফলে চাপ বাড়ছে বিদ্যমান করদাতাদের উপর। এমতাবস্থায় কর জাল সম্প্রসারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান করদাতারা কর প্রদানে নিরুসাহিত হবেন, তাই করজাল সম্প্রসারণে এনবিআর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগামী ৬ মাস কাজ করবে। 

তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন স্তরে কর আহরণের কারণে বিশেষকরে কর্পোরেট করের ইফেক্টিভ হার বেড়ে যায়, বিষয়টি এনবিআর গুরুত্বের সাথে বিবেচনা  করছে। সামগ্রিক রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা না কমিয়ে, কর হার যৌক্তিকীকরনের পাশাপাশি দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানো হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। ব্যবসায়িক লেনদেন প্রক্রিয়া ক্যাশলেস ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য ব্যবসায়ী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান এনবিআর চেয়ারম্যান, যার মাধ্যমে কর আহরণের হার আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন। 

তিনি রাজস্ব খাতের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি সমাধানের লক্ষ্যে ডিসিসিআইকে প্রয়োজনীয় গবেষণা পরিচালনা পূর্বক সুপারিশ পেশের আহ্বান জানান, যা এনবিআরকে যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণে সহযোগিতা করবে বলে মত প্রকাশ করেন, এ ব্যাপরে রাজস্ব বোর্ড প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবে।

এআর