এক যুগের পুরোনো সার্ভেইল্যান্স, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহায়তা চায় বিএসইসি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ০৫:০৮ পিএম

ঢাকা: পুঁজিবাজারের অনিয়ম তদারকির জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সার্ভেইল্যান্স প্রযুক্তি অত্যন্ত দুর্বল এবং পুরোনো।

১২ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু সার্ভেইল্যান্স প্রযুক্তি নবায়ন করা হয়নি। তাই উন্নত সার্ভেইল্যান্স নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রযুক্তিসহ সব ধরনের সহায়তা চেয়েছে বিএসইসি।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজস্ব ভবনে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানায় বিএসইসি। এ সময় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মোহসীন চৌধুরী, আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের প্র্যাকটিস ম্যানেজার নিরজ ভার্মার নেতৃত্বে সিনিয়র ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট জল্ট ব্যাংগো, ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর কনসালট্যান্ট সাদিয়া আফরিন, সোফি ডং এবং আইএফসির সিনিয়র অপারেশন অফিসার মি. সোলায়মান বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন।

ব্রিফিংয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেছি৷ কী কী ক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পেতে পারি, সে সম্পর্কে আলাপ করেছি। প্রথমেই আমরা সার্ভেইল্যান্সের ওপর জোর দিয়েছি। সার্ভেইল্যান্স টিম যেটা আছে, সেটাকে আমরা কীভাবে আরও উন্নত করতে পারি। আমরা গভর্ন্যান্স নিয়ে কথা বলেছি। এ ছাড়াও আমাদের নিজেদের ইআরপি এবং আইটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপ করা যায়, সেটা নিয়ে কথা হয়েছে।

[232601]

বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স অত্যন্ত দুর্বল জানিয়ে কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, আমরা সার্ভিলেন্স নিয়ে বলেছি এবং গভর্ন্যান্সটার ওপর জোর দিয়েছি। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একটা দুর্বল সার্ভেইল্যান্স নিয়ে আমরা কাজ করছি। ২০১২ সালে ইনস্টল করা একটা সফটওয়্যার। খুব শিগগির এটা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং আপগ্রেড করতে হবে। ২০১২ সালের পর আপগ্রেডও হয়নি। আমরা খুব তাড়াতাড়ি একটা বিশ্বমানে নেওয়ার জন্য কাজ করছি। সে জন্য উনাদের সহয়তা আমরা চেয়েছি। টেকনিক্যাল এবং সব ধরনের অ্যাসিসট্যান্স আমরা চাই।

বিএসইসির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে বাইরে হাত দেবেন জানিয়ে কমিশনার লালারুখ আরও বলেন, ‘গভর্ন্যান্স আমাদের থেকে শুরু করতে চাচ্ছি। নিজেদের ঘর থেকেই আমরা শুরু করব। আমাদের জবাবদিহিতা সবার আগে নিশ্চিত করব। তারপর আমরা বাকি সব খাতের জবাবদিহিতার জন্য যাব।’

এদিকে বিএসইসিতে সাংবাদিকদের প্রবেশ, বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব না দেওয়া এবং স্বেচ্ছাচারী মনোভাব, কমিশনার তারিকুজ্জামানকে মেয়াদ শেষের আগেই সব বিভাগের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করে পদত্যাগে বাধ্য করাসহ বিএসইসির বর্তমান কমিশনের বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগের সমালোচনামূলক জেরার মুখে পড়েন বিএসইসি চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ। তবে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়ে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে গেছেন তিনি।

বিএসইসিতে সাংবাদিকদের প্রবেশের বিষয়ে কমিশনার মোহসীন চৌধুরী বলেন, ‘যে কোনো প্রতিষ্ঠানের কিছু সিস্টেমেটিক ওয়েতে চলতে হয়। আপনাদের বিএসইসিতে আসা এবং যে সমস্ত তথ্য প্রয়োজন, সেগুলো আপনার সিস্টেমেটিক পদ্ধতিতে নেবেন। আমরা কোনো সময় বারণ করব না। সিস্টেমেটিক ওয়েতে আসলে একটা ডিসিপ্লিন থাকে।’

[232548]

কী ধরনের সিস্টেম অনুসরণ করতে হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এখানে ঢুকতে গেলে একটা রেজিস্ট্রার বই থাকে, কার কাছে যাবেন, সেটা জানাবেন, বইয়ে এন্ট্রি করে তারপর ঢুকবেন। 

তবে এ বিষয়ে আরও অসুবিধার কথা তুলে ধরলে মাইক্রোফোনের কাছে এগিয়ে এসে বিএসইসি চেয়ারম্যান রাশেদ বলেন, এই প্রোগ্রামটা শেষে হলে আমরা আলাদাভাবে আলোচনা করব। আজকে ডেকেছিলাম ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মতবিনিময়ের আপডেট জানানোর জন্য। 

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে না চাইলেও প্রশ্ন রাখা হয়, ১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দেওয়া স্বতন্ত্র পরিচালকেরা এখনো যোগ দেয়নি। অংশীজনদের সঙ্গে বিএসইসি যোগাযোগ করছে না বলেও অভিযোগ উঠছে। সমালোচনা রয়েছে তারিকুজ্জামানের অপসারণ নিয়েও।

এ সময় রাশেদ মাকসুদ বলেন, ‘এ প্রোগ্রামে ওইসব বিষয়ে আলাপ করার জন্য ডাকিনি। আমরা প্রত্যেকটা বোর্ডের সঙ্গে আলাদাভাবে কয়েকবার করে বসেছি। বোর্ডগুলো গত বৃহস্পতিবার নাগাদ প্রস্তুত হয়ে গেছে। এখন উনারা শিগগিরই সভা করবে।’ এরপর আর তিনি প্রশ্নের উত্তর দেননি। সবগুলো প্রশ্নই এড়িয়ে গেছেন।

এআর