সবজির দামে স্বস্তি 

পাইজাম চালের থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৪, ০৬:০৭ পিএম

ঢাকা : রাজধানীর বাজারে শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে। এতে করে সবজির দামে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে আলু ছাড়া সব ধরনের সবজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

তবে ধাপে ধাপে বাড়তে থাকা মাঝারি আকারের বিআর-২৮ ও পাইজাম জাতের চাল ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এর জন্য সরবরাহ ঘাটতি, বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে আমনে ক্ষতিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, লালবাগ, ঝিগাতলা বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে বিআর-২৮ ও পাইজাম জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬১-৬২ টাকা দরে। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭২-৮০ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে ৬৮-৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। নতুন করে দাম না বাড়লেও আগের মতো চড়া দামে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৬৫-৬৮, চিনিগুঁড়া ১২০ ও সুগন্ধি চাল ১২৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

[236655]

বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদের সদস্যদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছেবিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদের সদস্যদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবির) হিসাব অনুযায়ী, গত এক মাসে সরু চালের দাম প্রায় ৪ শতাংশ, মাঝারি চালের দর ৮ শতাংশ ও মোটা চালের দাম ২ শতাংশ বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী ও নোয়াখালী রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী সাইফুল্লাহ বলেন, ‘মূলত ধানের দাম বাড়লে চালের দামও বাড়ে। কৃষক বেশি দামে বিক্রি করলে রাইস মিল থেকে আমরাও বেশি দামে ক্রয় করি। বর্তমানে অন্য চালের তুলনায় মোটা চালের দাম একটু বেশি। নতুন চাল বাজারে এলে এলে এগুলোর দামও আশা করি কমবে।’

সবজির বাজার ঘুরে আগে থেকে চড়ে থাকা আলুর দামে আরও চড়া ভাব দেখা গেছে। ৩ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। আলুর মতো নতুন করে পেঁয়াজের দাম না বাড়লেও অনেকটা ভোক্তার নাগালের বাইরেই আছে পেঁয়াজ। বর্তমানে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৬০ টাকা দরে। 

সরবরাহ সংকটের কারণে মসলাজাতীয় পণ্যটির দাম বাড়তি বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করলেও ভোক্তা বলছেন, সরকারের বাজার তদারকি সংস্থার কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা সংকটের অজুহাতে ভোক্তার পকেট লুটছেন।

এমটিআই
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬-২৭ লাখ টন। এর মধ্যে চাহিদা মেটাতে আমদানি করতে হয় ৫-৬ লাখ টন। আমদানি করা পেঁয়াজের বড় অংশ আনা হয় ভারত থেকে। আর ভারতের বাজারেও এ সময় পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকে, ফলে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দরও বেশি পড়ে। এ ছাড়া বাজারে দেশি রসুন ২৫০, আমদানি করা রসুন ২৩০, আদা মানভেদে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৮০ টাকার মধ্যে। কেজিতে ২০ টাকা কমে পটোল ৪০-৫০, করলা ৫০, উস্তা ৮০, টমেটো ও গাজর ১৪০, ঝিঙা ৪০, চিচিঙা ও ধুন্দল ৫০, কাঁচা মরিচ ১০০-১২০, শিম ৮০, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।

এ ছাড়া প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, বরবটি ৫০-৭০, কাঁকরোল ৯০-১২০, ঢেঁড়স ও মুলা ৬০, লম্বা বেগুন ৮০, গোল বেগুন ১০০, প্রতি পিস লাউ ৬০, মিষ্টিকুমড়া ৬০, কচুরমুখী ৮০, শীতকালীন সবজির মধ্যে প্রতি পিস বাঁধা ও ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা করে।

মুরগি ও ডিমের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা। ব্রয়লারের মতো সোনালি মুরগির কেজিতেও ২০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা করে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। আগের মতো প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে।

মাছের বাজার ঘুরে দামের কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। অপরিবর্তিত দামে প্রতি কেজি শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০, চাষের কৈ মাছ ২২০, রুই ২৮০, পাঙাশ ১৮০-২০০, তেলাপিয়া ১৫০-২১০, কাতল মাছ ১৬০-২০০ ও প্রতি কেজি পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকায়। বড় আকারের রুই ও কাতাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৮০ টাকা দরে।

এমটিআই