এ কে আজাদ

ভ্যাট বসানোর আগে কস্ট অ্যানালাইসিস করা হয়নি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক:  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম

ঢাকা: সরকার কতগুলো নীতি নিচ্ছে। এই নীতি যদি বাস্তবায়ন হয় আমরা কোথায় চলে যাবো? যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নীতি নির্ধারকরা যদি আমাদের সঙ্গে একটু বসেন এবং ভ্যাট বসানোর আগে কস্ট অ্যানালাইসিস করেন সেটা দেশি পণ্যই হোক বা রপ্তানিমুখী পণ্যই হোক। যারা ভ্যাট বসাচ্ছেন বিভিন্ন পণ্যের ওপর তারা কস্ট অ্যানালাইসিস করেননি বলে মন্তব্য করেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক একটি সেমিনারে তিনি এই কথা বলেন।

[241835]

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিডার ব্যবসায়িক উন্নয়ন প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি।

এ কে আজাদ বলেন, টেলিভিশনে দেখেছি- উপদেষ্টা বলেছেন গ্যাসের দাম ৭৫ টাকা হলে খুব একটা ইমপ্যাক্ট (প্রভাব) পড়বে না। আমার কারখানা যদি আমি উনাকে দিতে পারতাম তাহলে খুব খুশি হতাম। আমার যে ইন্ডাস্ট্রি উনার পছন্দ হবে উনি নিয়ে নিক। আমি হেল্প করবো, আমি চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি হয়েছে ঋণাত্মক ৩৬ শতাংশ, বেসিক র-মেটারিয়াল ১২ শতাংশ কম এসেছে। এখন আমার যা কাঁচামাল দরকার সেটাই আমি আমদানি করতে পারছি না। আমদানি কমেছে ১১ শতাংশ, রপ্তানি ঋণাত্মক ৫.৯ শতাংশ। এসব নেগেটিভের মধ্যে যখন ভ্যাট, ট্যাক্স বাড়াচ্ছেন তার পরিণতি আপনারা চিন্তা করেননি।

তিনি আরও বলেন, ভারতের পাঁচটি প্রদেশ কর্ণাটক, উড়িষ্যা, অন্ধপ্রদেশ, বিহার ও গুজরাটে যদি কেউ বিনিয়োগ করেন তাহলে তারা ৪০ শতাংশ প্ল্যান্ট মেশিনারি ৫০ কোটি রুপি পর্যন্ত, জমি কিনলে সেখানে ২৫ শতাংশ সরকার সাবসিডি দেবে, নারীকর্মী নিয়োগ দিলে ৬ হাজার রুপি এবং পুরুষ নিয়োগ দিলে ৫ হাজার রুপি পাবেন প্রতি মাসে। সেখানে হুমড়ি খেয়ে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করেছেন বলে আমি শুনেছি। কারণ তারা ৫ বছরের জন্য এই সুযোগ-সুবিধা দেবে। তাহলে কে না সেখানে যাবে?

তিনি আরও বলেন, আমার প্রধান ব্যবসা হচ্ছে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল ও স্পিনিং মিল। আমার কারখানায় গত মাসের আগের মাসে ২৫ দিনই কাজ হয়নি। সেখানে শ্রমিকরা কার্ড পাঞ্চ করে চলে যায়, কাজ করে না। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আমার একটা কারখানা আছে যার পাশেই বেক্সিমকোর কারখানা। সেখানকার শ্রমিকরা আমার কারখানার শ্রমিকদের প্রভাবিত করে বাইরে বের করে নিয়ে যায়। মাসের পর মাস বেতন নিয়ে যাচ্ছে কাজ না করে। এতে কাস্টমারের কাছে কী মেসেজ যাচ্ছে?

তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা জীবন দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে পরিবর্তন সম্ভব। একটা পরিবর্তন ইয়াংরাই পারে। আমার মনে হয় আমাদের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বয়স ৩০ বছরের নিচে। আমার ছেলে আমার সঙ্গে জয়েন করেছে। আমি যেসব ব্যবসায় লোকসান করতাম বা ব্রেক ইভেন্টে ছিল সেগুলোতে সে লাভ করছে। সে তার মেধা, টেকনোলজি দিয়ে কাজ করছে। আজকের প্রোগ্রামের প্রধান অতিথি আমার ছেলের থেকে দুই-তিন বছরের বড়। তারাই পারবে পরিবর্তন করতে। এর জন্য তাদের সময় দিতে হবে, ওভারনাইট (রাতারাতি) তো পারবে না, কোনো কিছুই রাতারাতি হয় না।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম, এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।

এএইচ/আইএ