এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা, পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৫, ১১:০৬ এএম
এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা, পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের
ফাইল ছবি

ঢাকা: ঈদের পরে অর্থাৎ আগামী মাস থেকে ঋণখেলাপি হওয়ার নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে ব্যাংকগুলো। তবে নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের।

নতুন এই নীতিমালা অনুযায়ী, তিন থেকে এক বছর কোনো ঋণ অনাদায়ি থাকলে তা বিভিন্ন মানে খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে। আগে বিভিন্ন ধরনের ঋণ সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত অনাদায়ি থাকলে তা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হতো। নতুন নীতিমালায় সেই সময় কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নতুন এই নীতিমালা কার্যকর হলে তাতে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আরও বাড়বে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, সর্বশেষ গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা ছুঁই ছুঁই করছে। তাতে ব্যাংক খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ২০ শতাংশ খেলাপি হয়ে গেছে।

[246560]

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ঋণ তিন মাস অনাদায়ি থাকলেই তা নিম্নমানের, ৬ মাস অনাদায়ি থাকলে তা সন্দেহজনক ও ১২ মাস অনাদায়ি থাকলে ক্ষতিজনক ঋণ হিসেবে চিহ্নিত হবে। তবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও ভূরাজনৈতিক কারণে এখনই এই নীতিমালা বাস্তবায়ন না করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা এই নীতিমালা বাস্তবায়ন ছয় মাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে। 

এরই মধ্যে একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠন বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে এ নিয়ে আলোচনাও করেছেন। আবার কোনো কোনো সংগঠন লিখিত প্রস্তাব দিয়েছেন। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণ শ্রেণীকরণের এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে অনেক প্রতিষ্ঠানই খেলাপি হয়ে যাবে। তাতে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান রুগ্ণ শিল্পে পরিণত হবে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সম্প্রতি এক চিঠিতে গভর্নরকে জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ের ঋণের উচ্চ সুদ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঘাটতি, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারে অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে অনেক উদ্যোক্তার ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তাই ঋণ পরিশোধের সময়সীমা কিছুটা শিথিল করা দরকার।

এদিকে তেল মিলের মালিকদের সংগঠন এক চিঠিতে জানিয়েছে, গত ৫০ বছরে তাঁদের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কখনো ঋণখেলাপি হয়নি, এমনকি সুদ মওকুফের আবেদনও করেনি; কিন্তু গত কয়েক বছরে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় ও দেশে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানিনির্ভর এই ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অনেকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

এ ছাড়া বিগত সরকারের সময় কিছু ব্যবসায়ী ক্ষমতার অপব্যবহার করে একতরফা ব্যাংকিং–সুবিধা নিয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি ব্যাংক তাদের আর্থিক সক্ষমতা হারায়। এ কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই ঋণ শ্রেণীকরণের নীতিমালার বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তেল মিলের মালিকেরা।

এসআই

AddThis Website Tools