ব্যাপক সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না পণ্যমূল্য। নানা অজুহাতে একের পর এক পণ্যের মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। চিনি ও লবণের দাম বৃদ্ধির পর পরই চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি ভরা মৌসুমেও চালের দাম কমেনি। একই অবস্থা শীতে সবজিতেও। ভরা মৌসুমে শীতের সবজির আশানুরূপ দাম কমেনি। নিত্যপণ্য নিয়ে বারবার একই ধরনের ঘটনা ঘটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। রাজধানীর পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শীতকালীন সবজি।
বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকেই সবজি তাদের বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারে বেগুন (সাদা) কেজিপ্রতি ৩৫ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, পেঁপে কেজিপ্রতি ২৫ টাকা, পাতাকপি প্রতি পিচ ২০ টাকা, লালশাক আঁটি ১০ টাকা, সিম আকারভেদে কেজিপ্রতি ৩০-৫০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিচ ২৫ টাকা, লাউ পিচ ২৫ টাকা, নতুন আলু ৩০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, পেঁয়াজের কালি আঁটি ১০ টাকা ও মুলা ২০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে বেগুন (সাদা) কেজিপ্রতি ৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকায়, পেঁপে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা, পাতাকপি প্রতি পিচ ২৫ টাকা, লালশাক আঁটি ১২ টাকা, সিম আকারভেদে কেজিপ্রতি ৪০-৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিচ ৩৫ টাকা, লাউ পিচ ৩০ টাকা, নতুন আলু ৩৫ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, পেঁয়াজ পাতার আঁটি ২০ টাকা ও মুলা ৩০ টাকায়। পাইকারি ও খুচরা বাজারে এমন মূল্য পার্থক্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এর আগে আমরা দেখেছি, পাইকারি বাজারে দাম বেশি বলে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়ে। আর এবার হয়েছে উল্টো। আসলে বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করছে বলে এভাবে সবজির দাম বাড়ানো হয়। প্রতিটি বাজারেই শীতকালীন সবজির যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন শীতের সবজির দাম কমবে না এ প্রশ্ন সর্বসাধারণের।
বাংলাদেশে কোনো জিনিসের দাম একবার বাড়লে তা আর সহজে কমে না। অর্থাৎ আগের জায়গায় আর ফেরত যায় না। দেশে কোনো পণ্যের দাম কমেছে, এমন খবর ক্রেতারা খুব কমই পেয়েছে। যারা নিয়মিত বাজার করেন অথবা খোঁজখবর রাখেন বাজারের, তাদের পক্ষে সুস্থ জীবনযাপন করা সম্ভব নয়। যেভাবেই হোক, জনসাধারণকে এই জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করতে হবে। এক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন বিক্রেতাদের অসৎ মানসিকতার পরিবর্তন। যদিও এটা এক দিনে হবে না। এজন্য নিতে হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। যতদিন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানদারদের মানসিকতার পরিবর্তন না হবে, ততদিন বাজার নিয়ন্ত্রণহীন থাকবেই এবং উপেক্ষিত হবে ক্রেতাস্বার্থ।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই