ঢাকা : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলা এবং প্যানেল দাবিসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে আলাদা কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এবার শিক্ষক নিয়োগে স্বতন্ত্র কমিশন গঠনে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ নাকচ করার দীর্ঘদিন পর আবারও কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। চলতি বছরের শুরুতেই মাসিক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহ্ম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘আগের সুপারিশের আলোকে মাসিক সমন্বয় সভায় কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের জন্য আলাদা কমিশন ও বোর্ড গঠনের সুপারিশ করেছিল দশম জাতীয় সংসদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিশন গঠনের সেই সুপারিশ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে নাকচ করে দেয় মন্ত্রণালয়।
তবে বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। সংসদীয় কমিটির সুপারিশের আলোকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের দিকে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনের একটি খসড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। বোর্ডের ওই খসড়ায় ইবতেদায়ি বাদ দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ওই খসড়াও চূড়ান্ত হয়নি। এমনকি শিক্ষা বোর্ড গঠনের উদ্যোগ থেকে সরে আসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদে দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সে কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদে (দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা) নিয়োগ ও পদোন্নতি পিএসসির পরামর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। আর সহকারী শিক্ষক সরাসরি নিয়োগ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পিএসসির কাছে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা না পাঠিয়ে চেয়ারম্যানকে মন্ত্রণালয় জানিয়ে দেয়, সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিয়ে প্রধান শিক্ষক করা হবে। এর অংশ হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বরে ১৯৮৫ সালের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর গেজেটেড অফিসার ও নন-গেজেটেড কর্মচারীদের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন খসড়া প্রণয়ন করে।
গত বছরই খসড়াটি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের পর চলতি বছরের শুরুতেই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে আলাদা কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিষয়টি এখনও সিদ্ধান্ত পর্যায়েই রয়েছে। মাসিক সমন্বয় সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, আলাদা কমিশন গঠনের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠাতে হবে। এ বিষয়টি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় পরিচালক পলিসি ও অপারেশনকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মামলা এবং প্যানেল দাবিসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে আলাদা কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ