ঢাকা: অবশেষে ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণে কোনও শিক্ষকের বাধা থাকলো না। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারে সবার বেতন ফিক্সেশন করার অপশন যুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘আজ থেকে আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারে সবাই বেতন ফিক্সেশন করতে পারছেন শিক্ষকরা। শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকা এবং তৃতীয় শ্রেণির সনদধারীদের সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ‘
সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহম্মদ মনসুরুল আলম জানিয়েছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
অন্যদিকে বুধবার (২৭ এপ্রিল) ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ কার্যক্রম আগামী ১০ মে’র মধ্যে জরুরিভিত্তিতে সম্পাদন করতে মাঠ পর্যায়ে কর্মপরিকল্পনা পাঠানো ও বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহম্মদ মনসুরুল আলম। এই নির্দেশের ফলে শিক্ষকদের তথ্য সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৩, ১৯৯১ এবং ২০১৩ সালে বিধিমালায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সনদ না থাকায় আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেতন ফিক্সেশন হচ্ছিল না। এছাড়া শিক্ষকদের বেতন ফিক্সেশন নিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতারও অভিযোগ ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে গত ১৭ এপ্রিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহম্মদ মনসুরুল আলম অর্থ বিভাগে চিঠি দিয়ে সমস্যার সমাধান চান। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের শিক্ষক হয়রানি বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেন।
গত ১৭ এপ্রিল অর্থ বিভাগের পাঠানো চিঠিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ জটিলতা নিরসনে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রির চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ অপশন আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারে সংযোজন করার অনুরোধ জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ২০১৯ সালের বিধিমালার আলোকে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণে নির্দেশনা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রিধারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের জন্য আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারে প্রয়োজনীয় অপশন যুক্ত করা হয়। কিন্তু ২০১৯ সালের নিয়োগ বিধিমালা জারি আগে যেসব শিক্ষকরা কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে শিক্ষকতায় প্রবেশ করেন। সেই কারণে ১৯৮৩, ১০৯১ এবং ২০১৩ সালের বিধিমালার আওতায় নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা কম যোগ্যতা এবং তৃতীয় শ্রেণি থাকার কারণে বেতন নির্ধারণ করতে পারছিলেন না।
অর্থ বিভাগকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ১৯৯৩, ১০৯১ এবং ২০১৩ এর আওতায় নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়ে কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাত বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রির চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বর্তমানে কর্মরত আছেন। ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণে তাই সম্ভব হচ্ছে না।
এমতাবস্থায় যেসকল সহকারী শিক্ষক ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ১৯৯৩, ১০৯১ এবং ২০১৩ এর আওতায় নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়ে কম যোগ্যতা নিয়ে কর্মরত আছেন তাদের ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের জটিলতা নিরসনে আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারে প্রয়োজনীয় অপশন সংযোজন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
সোনালীনিউজ/এইচএন