ঢাকা: আগামী ২৩ থেকে ২৯ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন ও মাসব্যাপী কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের গত ৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত নির্দেশনা সকল বিভাগীয় উপপরিচালকদের পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ২০ সেপ্টেম্বরের নির্দেশনার আলোকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এই চিঠি দেওয়া হয়। দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় জানানো হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার অধীন ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল কর্মসূচি ও কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের আওতায় আগামী ২৩ থেকে ২৯ অক্টোবর ক্ষুদে ডাক্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ৩০ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালিত হবে। ওই সময়ে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী সকল শিশুকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন করানোর কর্মসূচি রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (ওজন, উচ্চতা ও চোখের দৃষ্টি শক্তি নিরূপণ) কার্যক্রমটি অনুষ্ঠিত হবে। শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় এ কর্মসূচি স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি উদ্যোগ।
নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ২৩ থেকে ২৯ অক্টোবর ক্ষুদে ডাক্তারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ওজন, উচ্চতা ও চোখের দৃষ্টি শক্তি নিরূপণসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। আর আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য উপপরিচালকদের আওতাধীন সকল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, পিটিআই সুপারিন্টেনডেন্ট, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং প্রধান শিক্ষকগণকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো প্রতিপালন করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনা
(ক) ২৩-২৯ অক্টোবর ক্ষুদে ডাক্তার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (ওজন, উচ্চতা ও চোখের দৃষ্টি শক্তি নিরূপণ) এবং ৩০ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর ২০২১ জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ) সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করবেন।
(খ) সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারগণ নিজ নিজ ক্লাস্টারের বিদ্যালয়গুলোয় জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ এবং মাসব্যাপী ক্ষুদে ডাক্তার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে প্রতিপালনের বিষয়টি নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করবেন।
(গ) তার আওতাধীন সকল কর্মকর্তাকে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলোয় অনুষ্ঠিতব্য ওই কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পরিবীক্ষণ করতে হবে।
(ঘ) যে সকল বিদ্যালয়ে এখনও ক্ষুদে ডাক্তার টিম গঠন করা হয়নি সে সকল বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকরা ক্ষুদে ডাক্তার টিম গঠন নিশ্চিত করবেন।
(ঙ) যদি কোনও বিদ্যালয়ে ওজন মাপার যন্ত্র, উচ্চতা মাপার ফিতা কিংবা চোখের দৃষ্টি মাপার চার্ট না থাকে; সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকগণ স্লিপের আওতায় ন্যূনতম পক্ষে একটি করে ডিজিটাল ওজন মাপার যন্ত্র এবং প্রতি শ্রেণির জন্য একটি করে উচ্চতা মাপার ফিতা ও একটি করে আই চার্ট সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।
(চ) শিক্ষকগণ যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে উভয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিদ্যালয়ের সকল সহকারী শিক্ষককে এ কর্মসূচীতে সম্পৃক্ত করতে হবে।
(ছ) সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পিটিআইয়ের পরীক্ষণ বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রভৃতিকে এ কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়াও প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার ঝরে পড়া ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের বিদ্যালয়ে এনে কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন করানোর এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে।
(জ) প্রধান শিক্ষকগণ কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পালনের আগের দিন দৈনিক সমাবেশে সকল শিক্ষার্থীকে ওষুধ সেবন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন।
(ঝ) স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক সরবরাহ করা সংযুক্ত নির্দেশনা শিক্ষার্থীদের পড়ে শোনাতে হবে এবং নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন এবং ক্ষুদে ডাক্তারদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
(ঞ) খালি পেটে কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন করানো যাবে না এবং অসুস্থ শিশুদের ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত রাখতে হবে, স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক প্রেরিত ছকে শিশুদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট সেবন এবং শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর তথ্য স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সরবরাহ করতে হবে এবং এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
সোনালীনিউজ/এন