শাবি : উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি আদায়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের দেয়া আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অনশন ভাঙলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। প্রায় সাত দিন পরে আজ অনশন ভাঙলো তারা।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহ অনশন করার পর জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের উপস্থিতিতে তারা বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অনশন ভেঙেছেন। ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে এসে অনশন ভেঙেছেন অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরাও।
এ সময় ড. জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলার ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়। এখানে শিক্ষার্থীরা সবাই বাইরে থেকে শীতে কষ্ট করছে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ কিন্তু তাদের জন্য কোনো মেডিকেল টিম নেই। যারা তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করতো তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। যা খুবই নিন্দনীয় একটি কাজ।
ঢাকা থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে ক্যাম্পাসে যান জনপ্রিয় এই লেখক জাফর ইকবাল। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী সাবেক অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।
আন্দোলনত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার সময় জাফর ইকবাল জানান, উচ্চ পর্যায়ে তার আলোচনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। এ কারণেই তিনি ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন।
অনশন না ভাঙিয়ে ফিরে যাবেন না বলেও জানান জনপ্রিয় এই লেখক। তার অনুরোধে অবশেষে অনড় অবস্থান থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অনশনরত সকল শিক্ষার্থী একসঙ্গে অনশন ভাঙ্গবেন বলে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে কথা দিয়েছেন।
এর আগে গতরাতে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল এবং অধ্যাপক ইয়াসমিন হক অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে। পরে বুধবার ভোর ৪টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে আসেন। ক্যাম্পাসে এসেই প্রথমে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান এবং তাদের কথা শোনেন। তিনি ওখানে আসলে শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে ধরে। এসময় পুলিশ উনার জায়গা ক্লিয়ার করতে গেলে তিনি বলেন, এরা সবাই আমার শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থীদের মধ্যে আমার সিকিউরিটির দরকার নেই।
তিনি আরও বলেন, আমি জেনেছি খাবার এবং চিকিৎসার জন্য ফান্ডে টাকা দেওয়ায় আমার সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীকে পুলিশ ধরে নিয়েছে।
এই ব্যাপারে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর একটা স্মারক গ্রন্থে আমার কাছে একটা লেখা চাইছিল। সেই লেখাটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা সম্মানি দেওয়া হইছে। আমি এই সম্মানির টাকাটা নিয়ে আসছি, শাবির এই আন্দোলনের ফান্ডে এই টাকাটা দিচ্ছি, তোমরা রাখো। তোমাদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করার জন্য আমাকেও সিআইডি এরেস্ট করুক।
এদিকে শিক্ষার্থীরা তাদের সকল দুঃখ ও ক্ষোভের কথা অধ্যাপক জাফর ইকবালের কাছে বলেছেন। তিনি সব কথা শুনে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন এবং তারাও স্যারকে কথা দেন সকাল ৮টায় একসঙ্গে সবাই অনশন ভাঙবেন।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ