যে মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২২, ০৩:৫৭ পিএম

ঢাকা : দেশে ২০১৪ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম প্রাক-প্রাথমিক চালু করা হয়েছিল। নানা জটিলতা ও শিক্ষক স্বল্পতার মধ্যে সেটি এখনও চালু রয়েছে।

কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে প্রাক-প্রাথমিক চালু করা হয়েছিল, সেটি অর্জিত না হওয়ায়, নতুন ধাঁচে প্রাক-প্রাথমিক চালু করা হবে। নতুন প্রক্রিয়ায় ভর্তিযোগ্য শিশুদের বয়সের সীমা কমানো হয়েছে। আগে ৫ বছরের বেশি বয়সি শিশুদের ভর্তি করা হতো।

এখন ৪ বছরের বেশি বয়সি শিশুদের ভর্তি করা হবে। এবার প্রাক-প্রাথমিকের মেয়াদ হবে দু'বছর। প্রথম বছর হবে প্রাক-প্রাথমিক ১, দ্বিতীয় বছর হবে প্রাক-প্রাথমিক ২। এখন চালু রয়েছে এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দুই বছর মেয়াদি নতুন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা (পিপিই) চালু করতে প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার বিদ্যালয়ে পাইলটিং করা হবে। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে। বর্ধিত পিপিই-এর অধীনে, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পাঁচ বছরের জায়গায় চার বছরের বেশি বাচ্চাদের নিয়ে শুরু হবে।

জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার (পিপিই) জন্য শিক্ষকদের ১৫ দিনের এককালীন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রশিক্ষণ শিশুদের বিকাশের ফলাফল শনাক্ত করতে, রিপোর্ট করতে এবং তাদের উন্নতিকে শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারেনি। এর ফলে সরকার শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম

\হদুই বছর মেয়াদি করা হয়েছে। গত ২৫ জুন এ বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পাইলটিংয়ের জন্য ৩ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচন করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করে পর্যায়ক্রমে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা হবে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশের প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ বছর বয়সি শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯ লাখ।

এদিকে, চালু থাকা প্রাক-প্রাথমিকের লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া প্রসঙ্গে সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, দেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষকরা ১৫ দিনের ইনডাকশন ট্রেনিং পান। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করলেও তত্ত্বাবধান বা কোচিংয়ের মাধ্যমে চলমান প্রশিক্ষণ বা সহায়তার সীমিত সুযোগ পান বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সমীক্ষার সুপারিশ অনুসারে, বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ বাড়াতে হবে। কেননা প্রাক-প্রাথমিকে বর্তমান শিক্ষক সংখ্যা ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়।

এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২৩ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে প্রাক-প্রাথমিকের নতুন কার্যক্রমের জন্য চলতি বছর আরও ৪০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। চলমান ৪৫ হাজার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। চলমান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল। করোনার কারণে দুই বছর নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত থাকে। এই সময় অনেক শিক্ষক অবসরে গেছেন। ফলে শিক্ষক সংকট রয়েই গেছে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, চলমান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রম্নত শেষ করা হবে। তিনি আরও জানান, চলতি বছরের মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করে নিয়োগ দেওয়া হবে। বুয়েটের মাধ্যমে চলমান নিয়োগের ফল তৈরির কাজ করা হচ্ছে। যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর পরই প্রাক-প্রাথমিকের জন্য সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। সেটির নিয়োগও চলতি বছরের মধ্যেই শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই