কোটা বিরোধী আন্দোলন

আজ প্রতিনিধি বৈঠক, সন্ধ্যায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৪, ০১:১৮ পিএম

ঢাকা : সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে কোটা প্রথার যৌক্তিক সংস্কার করে সংসদে আইন পাস করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা সর্বাত্মক আন্দোলন করছেন।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনের প্রতিনিধি বৈঠক করবেন। এরপর সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এর আগে শুক্রবার (১২ জুলাই)  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার জানান, আগামীকাল শনিবার (১৩ জুলাই) সারাদেশে সংগঠনটির সমন্বয়কদের নিয়ে অনলাইন-অফলাইনে প্রতিনিধি বৈঠক করা হবে৷ একই সঙ্গে পূর্বে ঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচিও চলমান থাকবে। পরবর্তীতে বিকেল ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

আবু বাকের মজুমদার বলেন, গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) আন্দোলনে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, শেকৃবিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ভাইবোনদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি আমাদের সমন্বয়ককে চড় থাপ্পড় মেরেছে৷ আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমি সমন্বয়কদের অভয় দিয়ে বলতে চাই, কেউ যদি আমাদের ওপর হামলা চালায় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

তিনি বলেন, গতকাল কুমিল্লায় এক সাংবাদিক বন্ধুর উপর পুলিশ হামলা করেছে। তাছাড়া গতকাল কিছু অছাত্র-কুছাত্রদের দিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাস ভরে রাখা হয়েছিল। পরে শাহবাগে কিছু কুচক্রী মহল তাদের দিয়ে আমাদের আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছে। সাংবাদিকরা গত ৫ জুন থেকে নিরলসভাবে আমাদের দাবির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই এবং জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাই।

[227562]

এর আগে শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরাও মিছিল নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, পুলিশ দিয়ে এ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। প্রশাসনকে যৌক্তিক জবাব দিতে হবে। কোটা সংস্কারের পরই তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন।

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। কোনোভাবেই যাতে আন্দোলনকারীরা বাংলামোটরের দিকে এগোতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতেই অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন ২০১৮ সালে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। শুরুতে ৪ দফা দাবি জানালেও ৭ জুলাই থেকে এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধান স্বীকৃত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা সংস্কার করা।

[227565]

আন্দোলনের একাধিক সম্বয়ক জানান, সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্রনৃতাত্তিক গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পর্যন্ত কোটা থাকতে পারে। এই তিন জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখা যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিকে প্রদানকৃত কোটাকে তারা অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক মনে করেন। কোটার যৌক্তিক সংস্কার করে সংসদে আইন পাস না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আন্দোলনের সমম্বয়ক মো মাহিন বলেন, কোটার সংস্কার না করা পর্যন্ত আমরা ফিরব না। সরকার শিক্ষার্থীদের আবেগ নিয়ে খেলছে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন কারও একার নয়। পেটে লাথি মারলে আমরা বসে থাকব না।

এমটিআই