পাবনা: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে উপাচার্য এবং প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান সুমিত, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাইয়্যুমুল হাসান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফারহান আরিফ কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পাবিপ্রবিতে গণসংযোগ করতে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠের পশ্চিমে মুক্তমঞ্চের পাশে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং দলীয় গণসংযোগ পরিচালনা করেন।
[236337]
এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি তাদের মাঝে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ‘গৌরবোজ্জ্বল অতীত: সংগ্রামী বর্তমান ও আগামীর প্রতিশ্রুতি’ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ‘তারেক রহমান কর্তৃক জাতির সামনে উপস্থাপিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ সংবলিত দুটি ছোট বই বিলি করেন।
পাবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ এটা সবাই জানে। ছাত্রদলের উচিত ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা। কিন্তু তারা সেটা না করে প্রকাশ্যে গণসংযোগ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শুধু নামেই ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ করেছে। কিন্তু আমরা এর বাস্তব কোন প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা ক্যাম্পাসে এসে গণসংযোগ করবেন এটা নিশ্চয়ই তাদের অজানা থাকার কথা নয়। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেননি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক একরামুল হক লিমন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে গণসংযোগে আসা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান সুমিতের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিল না। আমরা শুধুমাত্র সাধারণ ছাত্রদের কাছ থেকে জানতে গিয়েছি যে তারা কেমন ছাত্র রাজনীতি দেখতে চান। সেইসাথে তারেক রহমানের ৩১ দফা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে। যে কর্মসূচী সারাদেশে চলছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কোনো নেতাকে আমাদের সাথে রাখিনি। এটা নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরীর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এদিকে রোববার ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্রদলের কর্মসূচি পালনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালকের কাছেও স্মারকলিপি দেন।
[236331]
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. তানভীর হায়দার বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পর আমি ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে অবশ্য কাউকে পাইনি। আমার যাবার আগেই হয়তো তারা কাজ সেরে চলে গিয়েছিল। আইনলঙ্ঘন করে তারা কাজটি ঠিক করেনি। এ বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডি নিয়ে আমরা দফায় দফায় বসে আলোচনার মাধ্যমে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি কারা কারা এর সাথে জড়িত। তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার চেষ্টা করছি। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন কাজ করতে না পারে।’
উল্লেখ্য, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ১৩ আগষ্ট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি সহ সকল প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ছাত্র সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি।
এসএস