করোনায় তারকারা ঈদ কাটবেন যেভাবে

  • বিনোদন প্রতিবেদক   | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১২, ২০২১, ০৩:১১ পিএম

ঢাকা : করোনার কারণে ২০২০ সাল থেকে ঈদের আনন্দ অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে। দেশের শোবিজ অঙ্গনের চিত্রটাও একই রকম। মহামারির কবলে গত কয়েক মাসে একাধিক বরেণ্য তারকা চির বিদায় নিয়েছেন। সেই রেশ এখনও রয়ে গেছে।

তবুও সময় যেন কারও জন্য থেমে থাকে না। সবকিছুই এক সময় স্বাভাবিকতায় রূপ নেয়। আপন গতিতে চলতে থাকে জীবন। এর মধ্যেই চলে এলো ঈদ। 

দেশের করোনার ক্রান্তিকালে তারকাদের অনেকেই ঘরেই রয়েছেন। তেমন কোনও পরিকল্পনাও নেই কারও। 

চলুন জেনে নেয়া যাক এবারের ঈদের তারকাদের ঈদ ভাবনা...

শাকিব খান : ‘অন্তরাত্মা’ সিনেমা শেষ করে ঢাকায় ফিরেই ঘরবন্দি রয়েছেন শাকিব খান। গত বছরের মতো এবারও ঈদে বাড়িতেই কাটবে তার। বাবা-মাকে নিয়ে উৎসবের দিনটি কাটাবেন ঢাকাই সিনেমার এই শীর্ষ নায়ক। 

চঞ্চল চৌধুরী : ঈদে ভিন্ন কোনও পরিকল্পনা নেই চঞ্চল চৌধুরীর। করোনার এই সময়ে অনেকদিন ধরেই বাসায় রয়েছেন তিনি। ঈদের দিনেও ঘরে বিভিন্ন নাটক দেখে সময় কাটাবেন তিনি। এই তারকা সবাইকে পরামর্শও দিচ্ছেন মহামারির মধ্যে যেন সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব পালন করেন। 

পূর্ণিমা: আসলে ঈদ নিয়ে নতুন করে কোনো পরিকল্পনা নেই। ঈদে যেরকম করে বাসায় থাকা হতো সেরকম করেই থাকবো। গত বছরও করোনায় ঈদ গেলো, এবারো সেম সিচুয়েশন। আগের ঈদগুলোতে যেমন প্ল্যান থাকতো এদিক ওদিক যাওয়ার আত্মীয়-স্বজন আসা, তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া হত এবার তো তা হচ্ছে না। তাই আনন্দও থাকছে না।বাড়ির মধ্যে ফ্যামিলি মেম্বার এমনকি বাড়ির কর্মচারী আছেন তারাও ঈদের ছুটি নিবেন না। একে তো পরিবহন বন্ধ, তারাও ভয় পাচ্ছেন এমন পরিস্থিতিতে। তাই তারাও আমাদের সঙ্গেই ঈদ করবেন। আমার মেয়ে আরশিয়া ঈদ করতে ওর বাবার সঙ্গে চট্টগ্রাম চলে গিয়েছে। আমি ঈদের দুদিন পর গিয়ে নিয়ে আসবো। 

আমাদের ছোটবেলায় ঈদ যেমন এবাড়ি ওবাড়ি যেতাম সালামি নিতাম আমার মেয়ে আরশিয়ার ঈদ ওইরকম না। জন্ম থেকেই ওবাসায় ঈদ করেছে। ও আসলে এখন কিছুটা বুঝে ঈদে মেহেদী দিতে হয়, নতুন জামা পড়তে হয়, সেমাই খেতে হয়।

জয়া আহসান: আমি যেখানেই থাকিনা কেন সব সময় ঢাকাতেই আমি ঈদ করি। এবারের ঈদটা আসলে এক প্রকারের ঘরেই কাটবে। আমরা তো আশা করে ছিলাম এবারের ঈদটা ভালো করে হবে। আমি সবাইকে বলবো এতদিন ধৈর্য ধরেছেন, যেনো আরেকটু ধৈর্য ধরেন। এবার তো আত্মীয় স্বজনদের বাসায় যাওয়া কিংবা তারাও কেউ আসতে পারেন না। এটা সম্ভবও না আর উচিতও হবে না। তাই যারা বাইরে আছেন তাদের সঙ্গে আপাতত ফোনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি।

আর আমরা যারা ঘরে আছি তাদের তো কোনো সমস্যা নেই। তারা সবকিছু মেনে ঠিকঠাক মতো হাতে হাত রেখে কোলাকুলি করে ঈদ করতে পারবো।

আরিফিন শুভ: কোভিডের মধ্যে আসলে ঈদ বলে কিছু নেই। ঈদের দিন হলো দিনটা পার করা। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করা, তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া এগুলো আমি করবো না। মুম্বাই থেকে শুটিং করে আসার পর পায়ের ইনজুরি ভোগাচ্ছে। আগের বারের ঈদে ফুল লকডাউন ছিলো, সেইবারেও করিনি এবারও সেম। এইটুকু সচেতন যদি আমি নিজে না হই মানুষকে তাহলে কি বলবো? 

আল্লাহ যদি বাঁচাইয়া রাখেন সামনে আরো ঈদ দেখতে পাবো। আমি নিজে ও আমার আশেপাশের মানুষদের জন্য সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনটেইন করতে হবে। এবার আমার কষ্টটা হলো আমার ছবিটা গেলো বছরের আসতে পারেনি এবারও পারলোনা। 

স্বাভাবিকভাবে আমার মন মানসিকতা ভালো নেই। আমার লাইফে এতো লম্বা সময় নিয়ে কাজ করি নাই। দেড় বছর লেগেছে এই ছবিটা শেষ করতে। এই যে দুঃখটা এতো কষ্ট করে কাজ করলাম অথচ তাদেরকে দেখাতে পারলাম না। রেজিস্ট্রেশন করার পর এখনো আমি আমার মায়ের ভেকসিন নিতে পারিনি। 

মাহিয়া মাহি: গতবারের ঈদ করোনায় গেলো এবারের ঈদও করোনায়। আত্মীয় বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা হবে না, কারো বাসায় যেতে পারবো না, কেউ আসবে না। খুবই খারাপ কাটবে এবারের ঈদ।

আমি আমার পরিবারের সঙ্গেই ঈদ কাটাবো। আমি ঈদের দিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকায় থাকবো। এরপর আমাদের নিজস্ব গাড়িতে গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে যাবো। সেখানে সপ্তাহ খানিক থাকবো। 

করোনার জন্য এবার শ্বশুরবাড়িও যাবো না। তারাও কেউ এই করোনার জন্য বাসা থেকে বের হয় না। বিয়ে পর এই প্রথম ঈদে শ্বশুরবাড়ি ঈদ করা হচ্ছে না। ঈদের পর দিন অপুর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসার কথা রয়েছে।

বুবলী: আসলে এটা খুবই দুঃখজনক কারণ আমি মনে করি ঈদ মানেই আনন্দ ঈদ মানেই খুশী। যতোই বলি আমরা করোনা পরিস্থিতিতে যাচ্ছি আমরা এটা মেনে নিয়েছি কিন্তু এটা সম্ভব না। প্রতিনিয়ত করোনা বেড়েই চলছে। আমরা কিছু দিন আগেও মনে করে ছিলাম করোনা শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা করোনাকে জয় করে ফেলছি। কিন্তু না; করোনা একদম যায়নি আমাদের পাশাপাশিই আছে। আগামী কয়েক মাসে বা ফিউচারে কি হবে আমরা কেউই জানিনা। বেঁচে থাকলে সুস্থ থাকলে ঈদ করা যাবে। তাই যতোটুকু সর্তক থেকে ভালো থেকে ফ্যামিলির সঙ্গে বাসায় থেকে ঈদ করা যায় যেটা আমি নিজেও করবো। ঈদে আমি সময় পেলেই রান্না করতে পছন্দ করি।

সিয়াম আহমেদ: ঈদ আসলে যেভাবে কাটানোর উচিত সেভাবেই কাটাবো, ঈদ মানেই তো আনন্দ। এটাই আমার কাছে আনন্দের যে আমার পরিবারের সবাই সুস্থ আছেন। আল্লাহর কাছে এর থেকে বড় শুকরিয়া আদায় করা ছাড়া আর কিছুই নাই। এটাই এবারের সবচেয়ে আনন্দ। সুস্থতা নিয়ে ঈদের আনন্দ কাটাতে চাই। 

করোনার কারো বাসায় যাওয়া আড্ডা দেয়া যাবেনা। কিন্তু এর জন্য মন খারাপ করার কিছু নেই। ফোনে ভিডিও কলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। প্রকৃতির নিয়মে পৃথিবী চলবে আমাদের তো কিছু করার নাই। আমরা বেঁচে আছি সুস্থ আছি এটাই তো বড়।

ইমন: ঈদ হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। রমজান মাসের পর ঈদটা সবার কাছেই আনন্দের বিষয়। যতো বড়ই হইনা কেন ঈদ আমার কাছে স্পেশাল। গেলো বছরও ঈদে লকডাউন গেলো এই বছর ভাবছিলাম এটা হবে না। যাই হোক সব আল্লাহর ইচ্ছা।

ঈদ আমি পরিবারের সঙ্গে কাটাবো। ঈদের দিন পাঞ্জাবি পড়ে নামাজ পড়ে সেমাই খাবো। যদি সম্ভব হয় গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে পরিবার নিয়ে একটু ঘুরতে যাবো। আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব সবারই একই অবস্থা ঘুরাফেরা করাটা রিস্কি। ঈদ নিয়ে অনেক প্ল্যান ছিলো সেটা মনে হয় সম্ভব না। সবচেয়ে মন খারাপ লাগছে গেলো বারের মতো এবারো ঈদে নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। এতো বড় উৎসবে সিনেমা মুক্তি না পাওয়ায় মন খারাপ লাগছে।

নিরব: ঈদের মতো কাটাবো। আমি ঈদে আমার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে যাবো, সেখানে আমি ঈদ করবো। এবারের ঈদে অ্যাপসে আমার একটি সিনেমা মুক্তি পাবে। অনন্য মামুন পরিচালিত ‘কসাই’। প্রথম অ্যাপসে আমার ছবি মুক্তি পাচ্ছে তাই এটা নিয়ে এক্সসাইটিং ও ভয়ও কাজ করছে। 

অ্যাপসে ছবি দেখা এটা এখনো আমাদের অভ্যাস হয়নি। তবুও আশাকরি আস্তে আস্তে হয়ে যাবে। আমার যারা ফ্যান ফলোয়ার সিনেমা প্রেমী আছেন তাদেরকে অনুরোধ করবো অ্যাপসে আমার নতুন সিনেমাটা দেখুন তাহলে আমরা আরো ভালো ভালো সিনেমা বানাতে উৎসাহী হবো।

সাইমন সাদিক : পেশাগত কারণে ঢাকায় থাকতে হয় চিত্রনায়ক সায়মন সাদিককে। তবে ব্যস্ততা থেকে ছুটি পেলেই ছুটে যান নিজ গ্রাম কিশোরগঞ্জে। এবারও বেশ আগেই পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটাতে চলে গেছেন তিনি। উৎসব দিনগুলো সেখানে সবচেয়ে উপভোগ করেন এই তারকা। 

শতাব্দি ওয়াদুদ : সবসময় ঢাকাতেই ঈদ কাটে অভিনেতা শতাব্দি ওয়াদুদের। পরিবারের সঙ্গে বিশেষ দিনটি কাটাবেন তিনি। এরমধ্যে সুযোগ পেলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেও যেতে পারেন।

পিয়া জান্নাতুল : গত বছরের মতো এবারও ঘরেই ঈদ কাটাবেন মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল। তবে এবারের ঈদটা তার জন্য স্পেশাল। কারণ কয়েক মাস আগে আগমন হয় তার প্রথম সন্তানের। তাই উৎসবের দিনটি নতুন অতিথিকে ঘিরেই কাটবে এই তারকার।

নুসরাত ফারিয়া : ঢাকায় পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। করোনার সময় বাসার বাইরে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তার। তবে তিনি জানান, সামাজিক মাধ্যমেই পাওয়া যাবে তার ঈদের সাজে ছবি। 

ববি : ঈদ এলেই বাবার কথা আরও বেশি মনে পড়ে চিত্রনায়িকা ববির। তাই এখন উৎসবের আনন্দ আর আগের মতো নেই। এরমধ্যে দেশে করোনার পরিস্থিতে ঢাকাতেই কাটবে তার ঈদ। বিশেষ দিনে কাছের ও দূরের মানুষদের উপহার দিয়েই আনন্দ পান তিনি। 

দিলশাদ নাহার কনা : এবার ঈদ গাজীপুরে দাদাবাড়িতে কাটাবেন কণ্ঠশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা। পরিবারসহ সেখানেই রয়েছেন। শহরের ঘরবন্দি সময় থেকে নিস্তার পেতেই সবুজের মাছে ঈদ পালন করবেন এই তারকা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই