ঢাকা: রাজধানীর বারিধারারা ও মোহাম্মদপুরে পৃথক দু’টি অভিযানে বিপুল পরিমান মাদকসহ মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মৌকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি পুলিশ জানায়, আটক দুই মডেল দিনের বেলা ঘুমাতেন আর রাত কাটাতেন পার্টি করে।
ধনীদের টার্গেট করে পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন। এরপর তাদের সঙ্গে কৌশলে আপত্তিকর ছবি তুলে চলতো তাদের ব্ল্যাকমেলিং।
এমন অনেকগুলো ব্ল্যাকমেলিংয়ের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অভিযান চালায় ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। অভিযানে তাদের বাসা থেকে বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার করা হয়। এমনকি মডেল মৌয়ের বাসায় রীতিমতো বারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
রোববার (০১ আগস্ট) রাতে প্রথমে রাজধানীর বারিধারা এলাকায় ৯ নম্বর রোডে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলের সাবেক স্ত্রী মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পিয়াসার ঘরের টেবিল থেকে চার প্যাকেট ইয়াবা জব্দ করে ডিবি। পরে তার রান্নাঘরের ক্যাবিনেট থেকে নয় বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। অভিযানের এক পর্যায়ে ফ্রিজ খুলে একটি আইসক্রিমের বাক্স থেকে সিসা তৈরির কাঁচামাল ও বেশ কয়েকটি ই-সিগারেট পাওয়া যায়।
এর পর পরই দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে আরেক মডেল মৌয়ের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান শুরু করে ডিবি পুলিশ। এ সময় ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমান মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, তার বাসায় বারের সন্ধান পাওয়া গেছে।
তবে আটকের আগে মডেল মৌ বারের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বাসায় কোনো বার নেই। এগুলো নিজেদের জন্যই রাখা হয়েছে।
ডিবির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মহিদুল ইসলাম জানান, কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মৌয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
অভিযান শেষে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, পিয়াসা ও মৌ দু’জনই একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে আমরা অনেক ব্ল্যাকমেলিংয়ের অভিযোগ পেয়েছি, সেসব ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে তাদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। দু’জনের বাসা থেকেই বিদেশি মদ, ইয়াবা, সিসা পাওয়া যায়, মৌয়ের বাসায় মদের বারও ছিল।
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, আটক দুই মডেল হচ্ছেন রাতের রানী। তারা দিনের বেলায় ঘুমায় এবং রাতে এসব কর্মকাণ্ড করে। তারা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পার্টির নামে বাসায় ডেকে আনতেন। এরপর তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি-ভিডিও তুলে রাখতেন। পরবর্তীতে সেসব ভিডিও এবং ছবি ভিক্টিমদের পরিবারকে পাঠাবে বলে ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা হাতিয়ে নিতেন।
তিনি বলেন, তাদের বাসায় মাদক পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও গুলশান থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক মামলা হবে। এছাড়া, তাদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের যে অভিযোগ রয়েছে, সেজন্য আলাদা মামলা হবে। এসব মামলায় তাদেরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
২০১৭ সালের মে মাসে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে নাম ছিল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসার। প্রথমে মামলা করতে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করেছিলেন পিয়াসা। কিন্তু পরবর্তীতে সেই পিয়াসার বিরুদ্ধেই আবার মামলা তুলে নেওয়ার হুমকির অভিযোগে জিডি করেছিলেন ভুক্তভোগীদের একজন। চার বছর পর আবারও আলোচনায় সেই পিয়াসা।
সোনালীনিউজ/আইএ