ঢাকা : দেশি বিনোদন পাড়া এখন সরগরম আসন্ন নির্বাচন নিয়ে। সিনেমা ও নাটক- দুই মাধ্যমের অভিনয় শিল্পীদের দুই সংগঠন ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’এবং অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন একই দিন, ২৮ জানুয়ারি। প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে এফডিসিতে। অন্যটি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে।
এ দুই সংগঠনেই বিভিন্ন পদে নেতৃত্বের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারকা শিল্পীরা।
তবে আলোনার তুঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০২২-২০২৪) নির্বাচন। গত কয়েক বছরের নিয়মিত প্যানেল মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলের বিপক্ষে নানা চমক নিয়ে হাজির হয়েছে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদ।
বিশেষ করে গত কয়েক দিনে কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল নিত্যনতুন চমক দেখিয়ে যাচ্ছে। তারকাবহুল এ পরিষদটি ১৬ জানুয়ারি প্রকাশ করেছিল তাদের থিম সং। এবার তারা সিনেমাটিক ঢঙে সামনে আনল তাদের নির্বাচনি পোস্টার। যার পুরোটাতেই চলচ্চিত্রের আবহ।
পোস্টারের শুরুতেই দেখা যায় লেখা- ‘হাউস ফুল, হাউস ফুল, হাউস ফুল’। সিনেমার নামের মতোই বড় করে লেখা প্যানেলের নাম। যার কেন্দ্রীয় ভূমিকায় আছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ। পোস্টারে আছেন বাকি সদস্যরাও। সবার ছবিই রিকশা পেইন্টের আদলে দেওয়া।
পোস্টারটি ফেসবুকে প্রথম প্রকাশ করেছেন প্যানেলটির সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন ইমন।
নির্বাচন নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আলাপ-আলোচনা করেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার সমসাময়িক তো বটে, বিশেষ করে এ সময়ে যারা কাজ করছে তারাও আমাকে বেশ উৎসাহ দিয়েছে।
প্রযোজক, নির্মাতা, ক্যামেরাম্যান, নাচের অ্যাসোসিয়েশন ও ফাইটার গ্রুপ, মেকআপম্যান গ্রুপ সবাই বলেছেন নির্বাচনে অংশ নিতে। এত মানুষের ভালোবাসা ফেলে দিতে পারি না। তাদের প্রতি ভালোলাগা ও ভালোবাসা থেকেই শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।
এ ছাড়া ভিন্নভাবেও বিষয়টি আমি দেখছি। জীবন একটাই। এ একজীবনে আমি যেখান থেকে ইলিয়াস কাঞ্চন হয়েছি, সেটির জন্য কিছুই করলাম না, এ আফসোস যেন না থাকে, এটি ভেবেও নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তাই চেষ্টা করে দেখি, আগামী দুই বছর চলচ্চিত্রের জন্য কিছু করতে পারি কিনা।
আমার বিশ্বাস, সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে কিছু একটা হবে। এফডিসিতে শিল্পীদের কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা বেশি প্রয়োজন। শিল্পীরা সরকারের অনুদান নয়, কাজ করে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চান- এ লক্ষ্যেই কাজ করে যাব।
নির্বাচন নিয়ে নিপুণ গণমাধ্যমকে বলেন, আমি মনে করি শিল্পীদের সংকট মোকাবেলায় শিল্পী সমিতির অনেক কিছু করার সুযোগ আছে। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নিয়েও এ সংগঠন কাজ করতে পারে। তাই শিল্পী সমিতির সব দিকেই নজর রাখতে হবে। এই নজর রাখার কাজটি এতদিন ঠিকভাবে হয়নি বা হচ্ছে না বলে আমি মনে করি। এ জন্য আমি চিন্তা করেছি, শিল্পী তথা চলচ্চিত্র শিল্পের মানোন্নয়নে কিছু করব। সে লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
নির্বাচিত হলে আমি কমিটির সবার সহযোগিতায় চলচ্চিত্রের শিল্পীদের অনুদানের টাকায় নয়, কাজের ব্যবস্থা করে দিয়ে আর্থিকভাবে উন্নয়নের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব। শিল্পীদের আত্মমর্যাদা আছে। সেটির প্রতি সম্মান জানিয়েই তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাব। পাশাপাশি শিল্পীদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব ও বিবাদ দূর করে কাজের পরিবেশ তৈরি করব।
সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্রবান্ধব। তাকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এফডিসিতে নিয়ে আসার চেষ্টা করব। তিনি যাতে স্বচক্ষে আমাদের কর্মকাণ্ড দেখতে পারেন। আমি মনে করি মানুষ চেষ্টা করলে সব পারে। আমরা শিল্পী সমিতির উদ্যোগে বছরে কিছু সিনেমা নির্মাণের চেষ্টা করব।
সোনালীনিউজ/এমটিআই