ঢাকা : তরুণ-তরুণীদের কাছে তিনি অনিন্দ্য সুন্দরী। শুধু অভিনয়েই নয়, দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন রূপে এবং গুণেও। বয়স বাড়লেও রূপের ঝলকানি যেন একটুও কমেনি তার। তরুণ বয়সে যেভাবে রূপে মাতিয়েছিলেন এখনও যেন তার চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
দিন যতই বাড়ছে ততই যেন মুগ্ধতা বাড়ছে। বলছি ঢাকাই সিনেমার নন্দিত চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার কথা। পুরো নাম দিলারা হানিফ রীতা হলেও সবার কাছে তিনি পূর্ণিমা নামেই পরিচিত ও জনপ্রিয়। দুই যুগের অভিনয় ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য দর্শকনন্দিত সিনেমা।
আজ এই নায়িকার জন্মদিন। জন্মদিনে অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী থেকে শুরু সহকর্মীদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন এই সুন্দরীতমা; যাকে বলা হয় ‘বিউটি অব বাংলা সিনেমা’।
জন্মদিনটি এবার একটু বিশেষ তার জন্য। আর তাই বিশেষ এই দিনটি পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করতে ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন তিনি। জানান, আজকের দিনটি একান্তই পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন। পরিবারকে নিয়ে ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন।
[202863]
দেশ রূপান্তরকে পূর্ণিমা বলেন, ‘রাত থেকেই অনেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, সবার ভালোবাসা পাচ্ছি এটাই অনেক। দিনটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতেই এখন ঢাকার বাইরে অবস্থান করছি। পুরো সময়টা স্বামী আর সন্তানের সঙ্গে কাটাব। ঢাকায় ফিরব বৃহস্পতিবার।’
চলতি বছরেই ক্যারিয়ারের রজত জয়ন্তীতে পা রেখেছেন তিনি। দীর্ঘ এই সময়টাতে কুড়িয়েছেন অগণিত ভক্তদের ভালোবাসা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি প্রসঙ্গে ‘মনের মাঝে তুমি’ খ্যাত এ নায়িকা বলেন, ‘অপ্রাপ্তি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। প্রাপ্তি নিয়ে যদি বলি, অনেক কিছু পেয়েছি। এখনো যে মানুষ আমাকে ভুলে যায় নি, এটাই তো অনেক। এখনো দর্শকরা মনে রেখেছেন, ভালোবাসা দিচ্ছেন। তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছরই তো আমার ক্যারিয়ারের ২৫ বছর পূর্ণ হল। আমি তো খুব বেশি ছবি করিনি। আমার হিসেবে মতে ৮২ কিংবা ৮৩টা ছবি মুক্তি পেয়েছে আমার। অভিনয় করেছি ৮৭টি ছবিতে। এরমধ্যে কিছু মুক্তি পায়নি। আর নাটক করেছি ১০০ এর মত, বিজ্ঞাপন হবে ৫০টা। শো উপস্থাপনা তো একশোরও বেশি হবে। ক্যারিয়ার অনুযায়ী আমার ছবির সংখ্যা অনেক কম কারণ আমি অনেক বেশি ছবি করিনি। খুব বেছে বেছে কাজ করেছি।’
[202862]
মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে পূর্ণিমা অভিনীত তিনটি সিনেমা। একটি ওবায়দুল কাদেরের উপন্যাস অবলম্বনে ‘গাঙচিল’ এবং অন্যটি ‘জ্যাম’। আরেকটি সরকারি অনুদানে নির্মিত ছটকু আহমেদের পরিচালনায় ‘আহারে জীবন’। তবে সিনেমাগুলো কবে নাগাদ মুক্তি পেতে পারে এখনো নিশ্চিত নয়।
১৯৮৪ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করা পূর্ণিমার শৈশব সেখানে কাটলেও কৈশোরে চলে আসেন ঢাকায়। নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে নাম লেখান রূপালী পর্দায়। ‘শত্রু ঘায়েল’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু তার। ১৭ বছর বয়সে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমার মধ্য দিয়ে নায়িকা হিসেবে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে; যেটি মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে। প্রথম সিনেমাতেই নায়ক হিসেবে পেয়ে যান সেই সময়ের হার্টথ্রব রিয়াজকে। বাজিমাত করে বসেন প্রথম ছবি দিয়েই। ফটিকছড়ির রীতা একটু একটু করে হয়ে উঠেন আজকের পূর্ণিমা।
কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিলো না’ ছবির জন্য ২০১০ সালে পূর্ণিমা সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়াও পূর্ণিমা সেরা অভিনেত্রী হিসেবে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছে দুইবার- মনের মাঝে তুমি (২০০৩), হৃদয়ের কথা (২০০৬) সিনেমা দিয়ে।
ব্যক্তি জীবনে ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর পারিবারিকভাবে আহমেদ জামাল ফাহাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পূর্ণিমা। ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল তার কোলজুড়ে আসে এক কন্যাসন্তান; নাম আরশিয়া উমাইজা। ফাহাদের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর গত বছরের ২৭ মে আশফাকুর রহমান রবিনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পূর্ণিমা। স্বামী সংসার নিয়ে এখন বেশ আনন্দেই দিন কাটাচ্ছেন নায়িকা।
সোনালীনিউজ/এমটিআই