ঢাকা: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির হাতাহাতি ঘটনা এবার মামলায় গড়ালো। বনভোজনে খাবার ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা, অনেক গুণী শিল্পীকে দাওয়াত না দেওয়া, জায়েদ খানের সদস্যপদ স্থগিত, এক সিনেমার অভিনয় শিল্পীকে সদস্য পদ দেওয়ার ঘটনায় সদ্য সমাপ্ত পিকনিকে শিল্পীদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
শিল্পী সমিতির সদস্য নিশু তার মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন কয়েক জনের বিরুদ্ধে।তবে কোন থানায় এবং কার কার নামে মামলা করেছেন তা আগাম জানাতে চাননি এই শিল্পী। সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন।
তার অভিযোগ, সমিতি বরাবর অভিযোগ জানানোর একদিন পার হয়ে গেলেও সমাধান না পেয়ে মামলা করেছেন তিনি।
[218746]
নিশু বলেন, বিষয়টি আমি শিল্পী সমিতিকে অবগত করেছি। এ নিয়ে নিপুণকে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। শাহনূর ও জেসমিন আমাকে কল করেছিল। তারা বলেছিলেন আমরা দেখতেছি। তারপর আর খবর নেই। একদিন পার হয়ে গেছে। নিপুণ একটি বার ফোন করতে পারত কিন্তু করেনি। এটা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে।
নিশু আরও বলেন, আমি বিচার চেয়ে মামলা করেছি। এ নিয়ে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সংবাদ সম্মেলন করব তখনই বিস্তারিত বলব। আজ আমি ঈদের একটি নাটকের শুটিংয়ে ব্যস্ত আছি যে, কারণে কথা বলতে পারছি না।
আক্ষেপ করে এই শিল্পী বলেন, শিল্পী সমিতি আমাকে সহযোগিতা করেনি। ঘটনা ঘটার একদিন পার হয়ে গেলেও কেউ আমাকে সহযোগিতা করেনি। মামলা করার পর সবাই এখন সহযোগিতা করতে চাচ্ছে। আমি এখন আর তাদের সহযোগিতা নেব না।
[218697]
সেদিনকার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিশু বলেন, বড়রা সবাই চেয়ার খেলা খেলতেছে সেখানে চেয়ারে গিয়ে আমার মেয়ে বসে। মেয়েকে না করেছিলাম ওখানে যেতে কিন্তু ও খেলার জন্য যায়। ছোট মানুষ ওতটা বুঝে না শখ করে গিয়েছে খেলতে। পেছনে আঁখি নামের একজন ভদ্র মহিলা ছিল নাচের, আমি তাকে চিনি না। আর ছিলেন স্বপ্না।
‘আমার বাচ্চা চেয়ারে বসা মাত্রই থাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। ফেলে দেওয়ার জন্য আমার মেয়ে উচ্চস্বরে কথা বলা মাত্রই থাপ্পর দেয়। এরপর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। আমি এগিয়ে গেলে আমাকে মাথায় পেছন দিয়ে আঘাত করে ওরা। তখন আমার মেয়ে ওদের ধরতে এগিয়ে যায়। তারপর আবার আমার মেয়ের গায়ে হাত দেয় আঁখির ছেলে। ৩৫ বছরের এক যুবক আমার বাচ্চা মেয়ের গায়ে হাত দেয়।’
‘যিনি গায়ে হাত দিয়েছেন তিনি শিল্পী সমিতির সদস্য না। কিন্তু আমার মেয়ের দুটি পরিচয়। প্রথমত নায়িকা নিশুর মেয়ে, দ্বিতীয়ত শাবনূরের ভাতিজি। আমি শিল্পী সমিতির একজন সদস্য হওয়া সত্ত্বেও সমিতি থেকে বিচার পাইনি।’
গেল শনিবার (২ মার্চ) শিল্পী সমিতির বনভোজনে হাতাহাতির এই ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ৩ মিনিট ৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক কিশোরীর সঙ্গে অকথ্য ভাষায় কথা বলছেন একজন। এরপরই পরিস্থিতি মোড় নেয় ঝগড়ায়।
দুইজনের বাকবিতণ্ডায় শেষ পযন্ত ঝগড়া পৌঁছায় হাতাহাতিতে। এতে এফডিসিতে থাকা শিল্পী সমিতির পিকনিকে উপস্থিতরা ঝগড়া ও হাতাহাতি ঠেকাতে এগিয়ে আসেন। রোববার (৩ মার্চ) রাতে এমন ভিডিও নেট দুনিয়ায় প্রকাশ পেতেই মুহূর্তে তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে নেটিজেনদের মধ্যে।
ভাইরাল ভিডিওতে নিশুকে বলতে শোনা যায়, আমার বাচ্চা এমন একটি জায়গায় অসম্মানিত হবে সেটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমার মনে হয় না শিল্পী সমিতি এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নিবে। আমার সিনেমা দরকার নেই, আমার বাচ্চা আগে। আমি ভুলে যাব আমার সিনেমার ক্যারিয়ারের ২২ বছর। শিল্পী সমিতির কাছে আমার কোন প্রত্যাশাই নেই। কারণ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আমি নিপুণকে কল দিলাম কিন্তু সে কল ধরল না।
এএন/আইএ