‘পাপেটম্যান’ খ্যাত শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার লাইফ সাপোর্টে

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম

ঢাকা : বাংলাদেশের ‘পাপেটম্যান’ হিসেবে পরিচিত প্রবীণ চিত্রশিল্পী, নাট্যব্যক্তিত্ব প্রবীণ শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ারকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) মুস্তাফা মনোয়ারের ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, প্রোস্টেট ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য কিছুদিন আগে স্যার ভারতের দিল্লি গিয়েছিলেন।

[231533]

তিনি বলেন, দেশে ফিরে সুস্থ ছিলেন। গত বুধবার বিকেলে বাসায় মাথা ঘুরে পড়ে গেলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্যারের অবস্থা খুবই খারাপ, আপনারা সবাই দোয়া করেন।

মুস্তাফা মনোয়ারের স্ত্রী মেরী মনোয়ার রোববার রাতে জানান মুস্তাফা মনোয়ারের অবস্থা বেশ জটিল।গত মে মাসে ভারত থেকে চিকিৎসার পর তাঁকে দেশে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাঁকে রেডিয়েশন থেরাপি দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের পাপেটম্যান হিসেবেখ্যাত শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে নিউমোনিয়া ও প্রোস্টেট ক্যানসারে ভুগছেন।

মুস্তাফা মনোয়ার বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলাদেশের শিশুতোষ অনুষ্ঠানের প্রধান শিল্পী হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। বাংলাদেশের চিত্রকলায় তার অবদান ছাড়াও তিনি পাপেট বা পুতুলনাচের অঙ্গনে একজন পথিকৃৎ। এজন্য তাকে ‘পাপেটম্যান’ বলা হয়। পুতুলনাচকে তিনি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

[231529]

তিনি চিত্রকলায় বহু প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উন্নয়নে কাজ করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সব্যসাচী এই শিল্পী একাধারে চারুশিল্পী, নাট্যনির্দেশক ও শিল্প গবেষক। বাংলাদেশের পাপেট শিল্পকে নতুন মাত্রা দেওয়া মুস্তাফা মনোয়ার কবি গোলাম মোস্তফার ছেলে।

শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০০৪ সালে একুশে পদক পাওয়া মুস্তফা মনোয়ারের ৮৯তম জন্মদিন ছিল গত ১ সেপ্টেম্বর।

গুণি এ চিত্রশিল্পীর জন্ম ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর যশোরের মাগুরা মহকুমার (বর্তমান জেলা) শ্রীপুরে। তিনি নাকোল গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।তার বাবা কবি গোলাম মোস্তফার পৈত্রিক নিবাস ছিল ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে।পাঁচ বছর বয়সে মা জমিলা খাতুন মারা যান।ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি।

নারায়ণগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে বিজ্ঞানে ভর্তি হন।সেখানে তিনি পড়াশোনা না করে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে কলকাতা চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় থেকে ফাইন আর্টসে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।

কর্মজীবন শুরু করেন পূর্ব পাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে।পরে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহাপরিচালক, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন ঢাকার জেনারেল ম্যানেজার ও এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।

এছাড়া জনবিভাগ উন্নয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও এডুকেশনাল পাপেট ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।

ইউআর/এমটিআই