ঢাকা : বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ও ছিলেন সক্রিয় মাহিয়া মাহি।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির পক্ষ থেকে মনোনয়নও তুলেছিলেন তিনি। তবে মাহিকে নৌকার টিকিট দেয়নি আওয়ামী লীগ।
এদিকে আওয়ামী সরকারের পতনের পর দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে।সরকার পতনের পর থেকেই নাকি আতঙ্কে আছেন মাহিয়া মাহি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় দলটির অন্য নেতাকর্মীদের মতো তারও গ্রেফতার আতঙ্কে কাটছে দিন।
৫ আগস্টের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যতীত কোথাও দেখা মিলছে না মাহির। মোবাইল নম্বর কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া দিচ্ছেন না। শুটিং ফ্লোরেও তার দেখা মিলছে না।
[231967]
এদিকে গুঞ্জন চাউর হয়েছে মাহি নাকি গা ঢাকা দিয়েছেন। এমনকি মামলা আতঙ্কে রয়েছেন। মাহির ঘনিষ্ঠজনের বরাত দিয়ে এমন বেশ কিছু সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।তবে সূত্রের খবর, আওয়ামী লীগের সমর্থক এই নায়িকার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ নেই। এখনও তার বিরুদ্ধে মামলার তথ্যও পাওয়া যায়নি। আদৌ হবে কিনা তেমন সম্ভাবনার খোঁজ কেউ দিতে পারেননি।
এবার এ বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন মাহি। জানালেন, ধারণাটি অমূলক।এক সংবাদমাধ্যমকে মাহি বলেন, ‘আমি কেন ভয়ে থাকব? আমি এমন কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না, যার কারণে আমাকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। আমি সব সময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আপনারা খোঁজ নিলেই তা জানতে পারবেন।’
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব উপস্থিতি রয়েছে মাহির। বিভিন্ন সময়ে ছবি ও রিলস পোস্ট করতে দেখা গেছে ফেসবুকে। নিয়মিত ভিডিও ও ছবি পোস্ট করছেন তিনি।
এদিকে আওয়ামী সমর্থিত শিল্পীদের মধ্যে চিত্রনায়ক জায়েদ খান, সাজু খাদেম ও শাহরিয়ার নাজিম জয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তবে অনেক তারকাই মামলা আতঙ্কের কথা শিকার করেছেন। তাদের ভাষ্য, ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে বিপদে ফেলার জন্য কেউ কেউ এসব মামলার উস্কানি দিচ্ছেন। শিল্পীরা দলীয় সমর্থন করলেও তারা কখনো কারও ক্ষতি করেনি।
যদিও কয়েকদিন আগে দেশত্যাগ করতে গিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীদের জেরার মুখে পড়েন মাহি। সেখানে তাকে দেড় ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
এদিকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চলছে কড়া নজরদারি। এরইমধ্যে সেখানে আটকে গেছেন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অনেকে। কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাহিকেও এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল।
বিষয়টি নিয়ে নায়িকা বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি দেশের বাইরে গিয়েছিলাম। আপনারা জেনেছেন, বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীরা—ডিজিএফআই, এনএসআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থায় আমার রিপোর্ট ভালোভাবে চেক করেছেন। এরপরই তারা আমাকে দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এখন আমার নামে যদি কোনো বাজে রিপোর্ট থাকত, তাহলে কি তারা আমাকে দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিত। অবশ্যই না। ব্যক্তি মানুষ হিসেবে আমি একটি দলকে সাপোর্ট করতেই পারি। তবে সেই দলের হয়ে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত আছি কিনা এটা দেখার বিষয়। আমি এটুকু বলতে পারি, আমি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না এবং এখনও নেই।’
মাহির ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই বেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন এই অভিনেত্রী। বিগত সময়ে দলটির হয়ে প্রচার-প্রচারণায় সরব থাকায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছুটা আতঙ্কেও রয়েছেন তিনি।
তারা মনে করছেন, সম্প্রতি সময়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনের কয়েকজন তারকার নামে মামলা হওয়ায় এই আতঙ্কের সৃষ্টি।
ইউআর/এমটিআই