গান আর সুরের মূর্ছনায় স্টেজ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী

  • বিনোদন প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ১১:৫০ এএম
গান আর সুরের মূর্ছনায় স্টেজ মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী

ঢাকা : আর্মি স্টেডিয়ামে তখন হাজারো দর্শক অপেক্ষায়। পাকিস্তানের সুফি সংগীতের জনপ্রিয় শিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান মঞ্চে এলেন ছেলে শাজমান ফতেহ আলী খানকে সঙ্গে নিয়ে; ঢাকার দর্শকদের ভাসালেন সুরের মূর্চ্ছনায়।

'ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে গাইতে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে মঞ্চে ওঠে রাহাত ফতেহ আলী খান ও তার দল। 'তেরি মেরি' গানের সুরে সেতার ও সানাই পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা৷

সেই পরিবেশনা শেষে রাহাত ফতেহ আলী বলেন, "বাংলাদেশ আমি তোমায় ভালোবাসি। পাকিস্তান থেকে তোমাদের ভালোবাসায় চলে এলাম। প্রথমবার আমার ছেলে বাংলাদেশে এসেছে। তাকে নিয়েই শুরু করলাম 'আশ পাশ খুদা'।

এরপর 'সাজনা তেরি বিনা', 'নিত কেহার মাঙ্গা', 'ওরে প্রিয়া', তেরি আঁখো কী দড়িয়া কা', 'তেরে রাশকে কামার' গানে মাতিয়ে তোলেন দর্শকদের। উপমহাদেশের সংগীত কিংবদন্তি নুসরাত ফতেহ আলী খানের ভাতিজা রাহাত তার জনপ্রিয় বিভিন্ন গজলও পরিবেশনা করেন।

[240169]

জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের পরিবারকে সহায়তার জন্য এই 'চ্যারিটি কনসার্ট' এর আয়োজন করেছে ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হয় কনসার্ট। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম শুরুতে ঘোষণা দেন, কনসার্টের সামনের সারিতে ভিআইপি আসনে থাকবেন অভ্যুত্থানে আহত ১০০ জন দর্শক। কনসার্টের ভিআইপি অতিথি হিসেবে আসন গ্রহণ করবেন তারা৷

এরপর মঞ্চে ওঠে ব্যান্ড দল সিল‌সিলা। তাদের আধা ঘণ্টার পরিবেশনা শেষে ‘আওয়াজ উডা’ গা‌নের জন্য শিল্পী র‌্যাপার হান্নান মঞ্চে আসেন। হান্নানের পর ‘কথা ক’ গান দিয়ে দর্শক মাতান র‍্যাপার সেজান।

বির‌তির পর সা‌ড়ে ৫টার দি‌কে ম‌ঞ্চে ওঠে রক ব্যান্ড আফটারম্যাথ। আর্মি স্টেডিয়ামে এটাই তাদের প্রথম কনসার্ট। পরিবেশনা শুরু হয় 'অধিকার' গান দিয়ে। তারপর ‘উৎসর্গ’, ‘মা‌টির রোদ’সহ আরও ক‌য়েক‌টি গান পরিবেশন করে দলটি।

রক গানের উন্মাদনার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে মঞ্চে ওঠেন ব্যান্ডদল চিরকুট। 'ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা' গানটি দিয়ে শুরু করে প্রায় এক ঘণ্টার মত পরিবেশনায় তারা শোনান 'দুনিয়া', 'মরে যাবো', 'জাদুর শহরে', 'কানামাছি', 'আহারে জীবন'সহ আটটি গান।

চিরকুটের পরিবেশনা শেষে অভ্যুত্থানে আহতদের নিয়ে মঞ্চে ওঠেন সারজিস আলম। 'আমি কে তুমি কে' স্লোগানসহ আধা ঘণ্টার বক্তব্যপর্ব চলে। সেখানে শেখ হাসিনার বিচার দাবি করা হয়। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, ‘যে কোনো ষড়যন্ত্র’ মোকাবিলায় প্রয়োজনে আবারও আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এ কনসার্ট থেকে পাওয়া অর্থ যাবে শহীদ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে। বিনা পারিশ্রমিকে গান গাওয়ায় কনসার্টে আসা শিল্পীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সারজিস।

সাড়ে ৮টার দিকে মঞ্চে ওঠে ব্যান্ডদল আর্টসেল। 'পথচলা' গান দিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা। এরপর তারা শোনান 'অনিকেত প্রান্তর'।

এ ব্যান্ডদল জুলাই বিপ্লবকে উৎসর্গ করে গেয়ে শোনান একাত্তরের উজ্জয়িনী গান 'মাগো ভাবনা কেন' আর 'তীর হাওয়া এই ঢেউয়ের সাগর'। গান দুটির সঙ্গে গলা মেলান প্রায় দশ হাজার দর্শক।

এরপর 'ধূসর সময়', আর্তনাদ, 'অন্য সময়', দুঃখবিলান' শুনিয়ে শেষ হয় পারফরম্যান্স। তাদের পরিবেশনা শেষে উল্লাসে ফেটে পড়েন তার ভক্তরা। তাদের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে মঞ্চ ছাড়ে আর্টসেল।

এরপর মঞ্চে আসেন কনসার্টের মূল আকর্ষণ রাহাত ফতেহ আলী খান।

দর্শকদের উদ্দেশ করে এই 'চ্যারিটি কনসার্ট' এর আয়োজক সাদেকুর রহমান সানি বলেন, আমাদের দুই মাসের পরিশ্রমের ফসল এই কনসার্ট। আপনাদের নিয়ে জুলাই আন্দোলনে আহতদের জন্য কিছু করতে পারার এই ভালো লাগা সকলের।

কনসার্টে আরও উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, বাণিজ্য উপদেষ্টা বশির উদ্দিন।

এমটিআই