সালথায় দগ্ধ নারীর মৃত্যু

রোববার থেকে ফের শুরু হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৩, ০১:৩৮ পিএম

ঢাকা : শীত পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ঘটেছে গত ২৪ ঘণ্টায়। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় ৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) এই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড চলে যায় রংপুর বিভাগের দিনাজপুরে। সেখানে এদিন ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তাপমাত্রার এই ঊর্ধ্বগতি আরও ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। কাল শুরু দেশের সবচেয়ে শীতকালীন মাস মাঘ। প্রথম দিন থেকেই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি)।

এদিকে ফরিদপুরের সালথায় আগুন পোহানোর সময় দগ্ধ বড়ু খাতুন (৮১) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শীত পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যেখানে দেশের ২৬ জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল, সেখানে শুক্রবার তা ২৫ জেলায় নেমে আসে। জেলার সংখ্যা তেমন না কমলেও প্রকোপের বিচারে শীতের তীব্রতা বেশ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোথাও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ ছিল না, কেবল মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। এর পরও শীতের অনুভূতি বেশি থাকার মূল কারণ হচ্ছে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত শীতল বায়ু এবং বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতা। শুক্রবার সকালেও ঢাকায় উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বায়ু প্রবাহিত হচ্ছিল। আর বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ। ঢাকায় এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বোচ্চ ছিল ২৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিএমডি তথ্য অনুযায়ী, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ভোলা ও বরিশালে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সাধারণত ব্যারোমিটারের পারদ ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করলে সেটাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। আর মিটারের পারদ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে তা মাঝারি ও ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে ধরা হয়।

এদিকে গত কয়েক দিনের মতো শুক্রবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সূর্য আলো দিতে পেরেছে। মূলত সূর্যের উপস্থিতি দিনের বা ২৪ ঘণ্টার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়িয়ে রাখতে সহায়তা করছে। যে কারণে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির উপরে ছিল।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকা ও তার কাছাকাছি এলাকায় ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি লঘুচাপ অবস্থান করছে। এর পরও আজ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হতে পারে। দেশের বাকি এলাকাগুলোতে আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকতে পারে। কাল রোববার বা সোমবার থেকে শীত আবারও জেঁকে বসতে পারে। ওই সময় দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সালথা (ফরিদপুর) : সালথায় মেয়ে-জামাইয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে শীত নিবারণে আগুন পোহানোর সময় দগ্ধ বড়ু খাতুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শুক্রবার সকালে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার তিনি দগ্ধ হয়েছিলেন। নিহত বড়ু খাতুন সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত জলিল মোল্যার স্ত্রী।

শেরপুর : শুক্রবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে সীমান্তবর্তী এ জেলা। সঙ্গে ছিল হিমেল হাওয়া। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছন্দপতন ঘটে। মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলেছে। সরকারিভাবে ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে হতদরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ অব্যাহত আছে।

দিনাজপুর : শুক্রবার রোদের ঝিলিক থাকলেও দিনাজপুরসহ দেশের উত্তর জনপদে জেঁকে বসেছে শীত। অব্যাহত মৃদু শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এই জনপদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এদিন দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীত অনুভূত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে অসহায় মানুষ। তবুও জীবিকার তাগিদে বাড়ি থেকে বের হন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই