ড্রাগন চাষে খোরশেদের সাফল্যের গল্প

  • জাহাঙ্গীর আলম, কুড়িগ্রাম | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম পৌর শহরের পুরাতন হাসপাতালপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী দবির উদ্দিনের ছেলে খোরশেদ আলম। পেশায় বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দেখাশুনা করেন তিনি। বছর পাঁচেক আগে থাইল্যান্ডে বেড়াতে গিয়েছিলেন খোরশেদ আলম। সেখানে স্থানীয়দের ড্রাগন ফলের বাগান দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। দেশে ফেরার পথে সেখানকার স্থানীয়দের কাছ থেকে ড্রাগনের চারার কাটিং নিয়ে আসেন খোরশেদ। তারপর শখের বসে নিজ বাড়ির ছাদে সেটি রোপন করেন।

[234657]

বিদেশী সেই কাটিংয়ের চারা থেকে হওয়া গাছে প্রথমে দুটি ড্রাগন ফল ধরে। এতে বানিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষের স্বপ্ন জাগে খোরশেদ আলমের মনে। পরে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৩০টি ড্রাগন ফলের চারা সংগ্রহ করেন তিনি। ইউটিউব দেখে সেই চারা রোপন করেন তার বাগানে।  এতে সফলতা পেয়ে বানিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ শুরু করেন খোরশেদ আলম।

বর্তমানে তাঁর ৫০ শতক জমিতে ১০ প্রজাতির দুই হাজারের মত ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে। বাগান থেকে তিনি প্রতিবছরে প্রচুর ড্রাগন ফল পাচ্ছেন। প্রতিটি চারাগাছে ১০০ টাকা খরচে সব মিলে এখন পর্যন্ত তার ব্যয় হয়েছে দুই লাখ টাকা। দীর্ঘমেয়াদী এ প্রজেক্ট থেকে ব্যায় খরচ উঠে ড্রাগনের কাটিং বিক্রি ও ফল বিক্রি করে এ পর্যন্ত লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। খোরশেদ আলমের ড্রাগন দেখতে এসে অনেকেই ড্রাগন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। অন্যদিকে ড্রাগন বাগানে দিন মজুরের কাজ করে সংসার চলছে অনেকেরই। ড্রাগন ফল চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষি অফিস।

ড্রাগন ফলচাষী খোরশেদ আলম জানান, শখের বসে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করি। পরে ড্রাগন ফলের ফলন দেখে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ করি। গত বছর লাখখানেক টাকা আয় হয়েছে। এ বছরও ফলন ভালো এসেছে। কিছু ফল বিক্রি করেছি। গাছে পর্যাপ্ত ফলন রয়েছে, সামনে আরো বিক্রি করব। তবে এবার দামটা একটু কম থাকায় ফল বিক্রিতে লাভ কম হবে। তবে ফলের সাথে সাথে ড্রাগনের কাটিং বিক্রি করে মোটামুটি লাভ হচ্ছে।

ড্রাগন ফল চাষের বিষয়ে তিনি বলেন, এই ফল চাষে প্রথমে একটু খরচ বেশি হয়। সার আর চারাতে প্রথমে খরচ করলে এই ফল থেকে দীর্ঘমেয়াদী লাভবান হওয়া যায়।

ড্রাগন ফল চাষ করে শুধু যে খোরশেদ আলমই যে লাভবান হচ্ছেন তা কিন্তু নয়। এখানে তিনি সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থানও।  ড্রাগন ফল বাগান পরিচর্যাকারী দিনমজুর রিপন মজিবুল জানান, দীর্ঘদিন ধরে ড্রাগন বাগানে কাজ করে সংসার চালাচ্ছি, এই বাগানে এবার মোটামুটি ফুল ফল এসেছে। কিছু বিক্রি হয়েছে, সামনে আরো বিক্রি হবে। আশা রাখি বাগান মালিক মোটামুটি লাভবান হবে।

[234656]

খোরশেদের ড্রাগন বাগান দেখতে আসা রাশেদুল ইসলাম ও বাবু মিয়াসহ অনেকেই জানান, ইউটিউব ও ফেসবুকে ড্রাগন ফল দেখেছি। বাস্তবে ড্রাগন ফল দেখিনি। শুনেছি আমাদের কুড়িগ্রামে ড্রাগন ফলের চাষ হয় তাই আজ দেখতে এসেছি দেখলাম খুবই ভালো লাগলো। এই ফলটি আমরা চাষ করতে পরামর্শ নিচ্ছি।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি অফিসার নাহিদা আফরিন জানান, শখের বসে ড্রাগন চাষ করে সফল কৃষক খোরশেদ আলমের বাগানটি আমরা ইতিমধ্যেই পরিদর্শন করেছি। তার বাগানের ড্রাগন ফল খেতে মিষ্টি এবং সুস্বাদু। আমরা ড্রাগন ফল চাষে ওই কৃষককে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।  পাশাপাশি তার বাগানের সব সময় খোঁজ খবরও রাখা হচ্ছে।

এসএস