প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা হতাশ তবে হাল ছাড়েননি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২১, ০৪:৩১ পিএম

ঢাকা: ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পে-স্কেলসহ ৭ দফা অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় হতাশ হয়েছেন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা। তবে তারা হাল ছাড়েননি। দাবি আদায়ে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে। 

পে-স্কেল বাস্তবায়ন না হওয়া ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের সাথে প্রতারণার সামিল বলেও মনে করছেন অনেকে। 

আরও পড়ুন<<>>রাতের আঁধারে রিকশা চালায় নিন্ম গ্রেডের বহু কর্মচারী

এমন পরিস্থিতে বাজেটের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের দুঃখ-দুর্দশা এবং ক্ষোভ-বিক্ষোভের আলোচনা।  

ফেসবুক থেকে নেয়া।

প্রতি জেলায় আন্দোলন এবং কর্ম বিরতির কথাও বলছেন কেউ কেউ। ন্যায্যতা পেতে হলে ধারাবাহিক আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সরকারি কর্মচারীরা।তাদের মতে অধিকার কেউ দেয়া না আদায় করে নিতে হয়। 

আরও পড়ুন<<>>‘জাতীয় বেতন স্কেল যেন বৈষম্যের অদৃশ্য দেয়াল’

সামাজিক মাধ্যমে পরামর্শ এসছে সয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে কর্মচারীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরার। 

ফেসবুক থেকে নেয়া।

এর আগে গত শনিবার (৫ জুন) মানববন্ধনে নিজেদের দাবিগুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় হতাশা জানিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সরকারি কর্মচারীরা।  

আরও পড়ুন<<>>ঋণে জর্জরিত নিন্ম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীরা

মানববন্ধনে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ২০০৯ সালে সপ্তম জাতীয় পে-স্কেল প্রদান করা হয় এবং সর্বশেষ ২০১৫ সালে অষ্টম পে-স্কেল প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রদান করা হয়। বর্তমান সময়ে বাজার মূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও পারিবারিক ব্যয় বৃদ্ধির দরুণ ২০২১ সালে নবম জাতীয় পে-স্কেল প্রদান অনিবার্য হয়ে পড়েছে।’

সরকারি কর্মচারীদের ৭দফা দাবিগুলো হলো-
১) জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন পূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সনের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে। পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন  প্রথা পূনঃবহাল করতে হবে। 


২) এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের সরকারী কর্মচারীদের পদ ও বেতন বৈষম্য দুর করতে হবে। ব্লক পোষ্টধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

৩) আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে হস্থান্তর করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টার রোল ও অন্যান্য দপ্তররে কর্মরত মাস্টার রোল, কন্টিজেন্স ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। 

৪) সরকারি কর্মচারিদের পূর্বের ন্যায় ৩টি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পূনঃবহাল করতে হবে। জীবন যাত্রার মান সমুন্নত রাখার স্বার্থে ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০% থেকে ১০০% ও গ্রাইচ্যুইটির হার ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকায় উন্নীত করণ করতে হবে। 

৫) ৯ম পে-স্কেল প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে ৫০% মহার্ঘ ভাতা অবিলম্বে দিতে হবে।

৬) প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত কর্মচারীদের ন্যায় ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারিদের বিনা সুদে ৩০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের যোগদানের দিন থেকে সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য করা রীট মামলার মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত আদেশ অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

৭) চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষকদের ন্যায় অন্যান্য সকল দপ্তরে পোষ্য কোটা চালু করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারর র্কমচারী সমন্বক আমজাদ আলী খান, কো-সমন্বয়ক বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আনোয়ারুল ইসলাম তোতাসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সোনালীনিউজ/আইএ