ঢাকা : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, মৃত্যু, গ্রেপ্তারে বদলে গেছে আন্দোলনের ধরন ও কর্মসূচি। এক দফা দাবি আদায়ে সারাদেশের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে শুরু থেকেই নানা ইস্যুতে গুজবে সয়লাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। তবে আন্দোলন বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের গুজব, অসত্য তথ্য আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ছে।
শনিবার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে আন্দোলন নিয়ে শনিবার দিবাগত রাতভর বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা গল্প, গুজব, অসত্য তথ্য ছড়াতে থাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জুড়ে।
[228826]
শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের রাতভর শাহবাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থান, শাহবাগে অবস্থান, আন্দোলনকারীদের টাকাসহ গ্রেপ্তার ছাড়াও অনেক গুজব প্রচার হয়েছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফেসবুক পোস্টে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ‘৭ মিনিটে পরিস্কার’ এর পোস্টও দেখা যায়। তবে বাস্তবে এগুলোর কোনো সত্যতা মেলেনি।
রাতে বেশ কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপ ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক আইডিতে কয়েকটি এক হাজার টাকার বান্ডিলের ছবি পোস্ট করে লেখা হয় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা সারজিসের বাসা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করেছে র্যাব-১০। তবে যাচাই করে দেখা যায়, যে ছবিটি পোস্ট দেয়া হয়েছে সেটি কয়েকদিন আগে অন্য একটি গ্রুপে দেওয়া এক তরুণীর পোস্ট। সেখানে লেখা ছিল, আব্বুর পেনশনের টাকা ব্যাংক থেকে উঠিয়ে নিলাম। এছাড়াও এমন কোনো অভিযানের কথা নিশ্চিত করেনি র্যাব।
[228825]
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাতভর দেশের পরিচিত ইউটিউবার, ইনফ্লুয়েন্সার ও অভিনেতাদের নামে ছবিসহ ভুয়া পোস্ট করা হয়। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, ভারতীয় অভিনেতা শাহরুখ খান, অভিনেত্রী কাজলের ছবি দিয়ে পোস্ট করা হয়, কোটা আন্দোলনের পাশে ছিলাম, এখন যেটা চাচ্ছেন সেটার পাশে নাই।
টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক ও ইউটিউবার রাফসান দ্যা ছোট ভাই -এর ছবি দিয়েও একই কথা পোস্ট করা হয়। তবে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে গিয়ে এধরনের কোনো পোস্ট দেখা যায়নি।
এছাড়া রাতেই দেশ ছাড়ছেন কোটা আন্দোলনের সমন্বয়করা ও সন্ধ্যার পর বোরকা পড়ে এম্বুল্যান্সে করে ঢাকা ছাড়লো ছাত্রলীগের সাদ্দাম ও ইনান এমন ভুয়া খবর ছড়ানো হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ফ্যাক্ট চেকাররা বলছেন, শনিবার রাতভর গুজবের রাত ছিল। তবে কোনো গুজবেরই সত্যতা পাননি তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের গুজব সমাজে তৈরি করে বিশৃঙ্খলা, যা রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই যে কোনো খবর যাচাই-বাছাই না করে বিশ্বাস করা ও ছড়িয়ে দেয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ তাদের।
এমটিআই