থমথমে পাহাড়ে ষড়যন্ত্রের খোঁজ

  • চট্টগ্রাম প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ১০:৫৩ এএম

চট্টগ্রাম : পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাতে অন্তত চারজনের মৃত্যুর পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে পুরো পার্বত্য অঞ্চলে। আগের দুদিনের মতো গতকাল শনিবার নতুন করে কোনো সহিংসতার ঘটনা না ঘটলেও, সবার মধ্যে বিরাজ করছে অজানা এক আতঙ্ক। পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা চরম রূপ নিয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

বন্ধ রয়েছে বাজার, দোকানপাট ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। চলছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবির যৌথ টহল। এরই মধ্যে নিহত ও আগুন লাগিয়ে বাড়িঘর, দোকানপাট পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবিতে তিন পার্বত্য জেলায় গতকাল সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে ৭২ ঘণ্টার সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি।

যে কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন প্রসীত খীসা নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

[232561]

তবে সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতাদের অভিযোগ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ভুল বুঝিয়ে ইউপিডিএফ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল পার্বত্য অঞ্চল পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা। তারা রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষকর্তা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এ সময় তারা যেকোনো মূল্যে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকারের দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা জানান। আর এজন্য প্রয়োজন হলে কঠোরতা অবলম্বন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন।

এই চার উপদেষ্টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করা হলে ‘হাত ভেঙে’ দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে দেওয়া যাবে না। যারা পরিস্থিতির অবনতি করার চেষ্টা করবে, তাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে।’

রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে সংঘাত, সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

এ সময় স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের কোথাও যেন ছন্দপতন ঘটছে। এর পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হবে।’

রাঙ্গামাটির উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুর ১২টায় সেনাবাহিনীর রাঙ্গামাটি রিজিয়নের প্রান্তিক হলে জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এই প্রতিনিধিদলের সভা হয়।

[232479]

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, পুলিশপ্রধান মইনুল ইসলাম, সেনাবাহিনীর চট্টগ্রামের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাইনুর রহমান ও বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম। স্থানীয়দের মধ্যে বিএনপি, জনসংহতি সমিতি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, পরিবহন মালিক শ্রমিক, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ বক্তব্য ও পরামর্শ তুলে ধরেন।   

রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে সহিংসতার কারণে তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে পাহাড়ি ছাত্র-জনতা। এতে সমর্থন দিয়েছে প্রসীত খীসা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ। এ ছাড়া শুক্রবারের সহিংসতায় বিপুলসংখ্যক গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় শ্রমিক সংগঠনগুলো। এতে রাঙ্গামাটিতে গতকাল সকাল থেকে অবরোধ ও ধর্মঘটের কারণে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল নৌ-চলাচলও। তবে শহরে কোনো স্থানে পিকেটিং চোখে পড়েনি। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। আতঙ্ক-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে শহরবাসী। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হননি।

অবরোধে ইউপিডিএফ সমর্থন দিলেও ভিন্ন সুর সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির। সংগঠনটির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি ডা. গঙ্গা মানিক চাকমা বলেন, ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলনের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ভুল বুঝিয়ে ইউপিডিএফ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। জনসংহতি সমিতিও চায় পাহাড়ে শান্তি বিরাজ করুক। এজন্য আমরা পার্বত্য চুক্তি করেছিলাম। পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে।’

এদিকে রাঙ্গামাটিতে সহিংসতার আগুনে পুড়ে পাওয়া বেসরকারি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ চালু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই পুড়ে যাওয়া কেবল মেরামতের কাজ শুরু করেন শহরের ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা।

শহরের হ্যাপির মোড় এলাকায় ইয়েস ডট নেটের কেবল সংস্কারের দায়িত্বে থাকা উইপন চাকমা বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) আগুনে পুড়ে যাওয়া কেবল সরিয়ে নতুন কেবল দিয়ে সংযোগের কাজ চলছে। যেখানে কেবল ছিঁড়ে গেছে, সেখানেও মেরামতের কাজ চলছে। সকাল থেকে শহরের বনরূপা, রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি এলাকায় সংযোগ সচল হয়েছে। তবে এখনো চম্পকনগর এলাকায় সংযোগ দেওয়া যায়নি। তবে কাজ চলছে; আশা করি আজকের মধ্যে সব লাইন ঠিক হয়ে আসবে।’

[232531]

ফাস্ট অ্যান্ড ফাস্ট কোম্পানির দায়িত্বে থাকা কাজল বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের লাইন মোটামুটি ঠিক হয়ে এসেছে। আজকের মধ্যে সব লাইন সচল করা সম্ভব হবে।’

বনরূপা এলাকায় দিগন্ত ডট নেটের কাজে যুক্ত এক কর্মচারী বলেন, তাদের লাইনের কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। গতকালের মধ্যে লাইন পুরোপুরি সচল হয়ে যাবে।

শুক্রবার রাঙ্গামাটিতে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এ সময় আগুনে পুড়ে যায় কয়েকটি দোকানপাট। এ সময় পুড়ে যায় ইন্টারনেটের কেবল। ফলে শুক্রবার থেকে কিছু জায়গায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট অচল হয়ে পড়ে। তবে এ সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল ছিল। শহরে ২০টি কোম্পানি প্রায় ১২ হাজার গ্রাহককে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছে।

রাঙ্গামাটির সহিংসতার ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করেনি পুলিশ। এ ছাড়া কোনো মামলাও হয়নি গতকাল পর্যন্ত।

রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, ১৪৪ ধারা জারির পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে এলে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।

খাগড়াছড়ি পরিদর্শনে তিন উপদেষ্টা : পার্বত্য চট্টগ্রামে উদ্ভূত পরিস্থিতি দেখতে এবং করণীয় ঠিক করতে খাগড়াছড়ি পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে যাওয়া প্রতিনিধিদলের অন্য দুই সদস্য হলেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ। তারা বিকেলে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় জেলার শান্তি-সম্প্রীতির উন্নয়নে মতামত ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন মং সার্কেলের রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া, সাবেক অধ্যক্ষ বোধিসত্ত দেওয়ান, সুশীল জীবন চাকমা, সাংবাদিক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য প্রমুখ।

এ সময় বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জান ছিদ্দিকী, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. মাইনুর রহমান, পুলিশের আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান, জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টারা পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষায় বসবাসরত বাসিন্দাদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তারা ষড়যন্ত্র রুখতে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেন। তারা বলেন, পাহাড়কে অশান্ত করতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। যার যার অবস্থান থেকে দল-মত নির্বিশেষে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও অনুরোধ করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনকে সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন উপদেষ্টারা।

এর আগে রাঙ্গামাটি থেকে হেলিকপ্টারে খাগড়াছড়ি আসেন তিন উপদেষ্টা। বিকেল ৪টায় সভা শুরু হয়ে বিকেল ৫টায় শেষ হয়।

খাগড়াছড়িতে ৭২ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিন অনেকটাই শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। অবরোধ চলাকালে জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সড়ক অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। শহরের ভেতর কিছু হালকা যানচলাচল করলেও তাও ছিল সীমিত। সাজেকের উদ্দেশে আসা বেশ কয়েকজন পর্যটক খাগড়াছড়িতে আটকা পড়েন, তবে কতজন আটকা পড়েছেন তা জানা যায়নি। অবরোধ থাকায় সাজেক থেকেও কিছু পর্যটক ফিরতে পারেননি।

জেলার পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘শুক্রবার থেকে জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।’

গত বুধবার এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার জেরে জেলার দীঘিনালা ও খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় তিনজন নিহত, কয়েকজন আহত হন এবং বহু দোকানপাট পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সবার অধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি উপদেষ্টা নাহিদের : ‘পাহাড়ে নানা ধরনের বৈষম্য রয়েছে। এখানে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর নানা রকমের বঞ্চনা রয়েছে। আমরা লড়াই-সংগ্রাম করে যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি, সেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না’ এসব কথা বলেছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। গতকাল সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে বৈষম্যহীন এক বাংলাদেশ গড়তে চাই। সবার সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। পাহাড়ে যারা ভেদাভেদ, দূরত্ব তৈরি করে সুযোগ নিতে চায়, তাদের কোনোভাবে সুযোগ দেওয়া যাবে না। পাহাড়-সমতল মিলে বাংলাদেশ।’

এর আগে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে গেল বৃহস্পতিবারের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে।

সাজেকে ৮ শতাধিক পর্যটক আটকা : অবরোধের কারণে রাঙ্গামাটির ভূস্বর্গখ্যাত সাজেকে ভ্রমণে গিয়ে আটকে পড়েছেন ৮ শতাধিক পর্যটক। গতকাল সকাল থেকে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় দূরপাল্লার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটের সব যানচলাচল বন্ধ থাকে। যার কারণে সাজেকে শুক্রবার ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা আটকা পড়েছেন।

সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ জানান, অবরোধের কারণে সাজেকে ৮ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। মূলত শুক্রবার খাগড়াছড়ি থেকে যারা সাজেক গিয়েছিলেন, তারাই সেখানে আটকা পড়েছেন। পরিস্থিতি ভালো হলে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার বলেন, ‘অবরোধের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় পর্যটকদের কোনো গাড়ি ছাড়া হয়নি। সাজেকে পর্যটকরা আটকা পড়েছেন। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অবরোধের প্রভাব বান্দরবানে : ৭২ ঘণ্টা সড়ক ও নৌপথ অবরোধের অবরোধের প্রভাব পড়েনি বান্দরবানে। চলেছে সব ধরনের গণপরিবহন। খোলা ছিল নৌপথও। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকালে বান্দরবান থেকে ছেড়ে গেছে চট্টগ্রাম-ঢাকা-কক্সবাজারের বাস। জেলা সদরের কোথাও কাউকে পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। নিত্যদিনের মতো সব ধরনের দোকান ছিল খোলা। সূত্র : দেশ রূপান্তর

এমটিআই