ঢাকা : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, বিশ্বব্যাপী শিশুদের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়েছে আশংকাজনক হারে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শিশু-কিশোরদের টাইপ ১ ডায়াবেটিস আক্রান্ত বেড়েছে ৪৫ শতাংশ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৯৫ শতাংশ। কেন বাড়ছে এই প্রবণতা?
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণ এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে কারও ডায়াবেটিস থাকলে সেই পরিবারের ছোট সদস্যদেরও এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। চিকিৎসকদের মতে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জেরে শিশুদের বার বার মূত্রত্যাগ, অতিরিক্ত খিদে, পিপাসা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি যে কোনও ভাইরাল সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অনেকখানি বেড়ে যায়।
শিশুর শরীরে এক বার এই রোগ বাসা বাঁধলে তার প্রভাব পড়ে পড়াশোনা, খেলাধুলাসহ তার পুরো জীবনযাপনে। মূলত খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম ও বাড়তি ওজনের সমস্যাকেই টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসাবে নির্ধারিত করা হয়। বর্তমানে শিশুদের খাদ্যাভাসে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের তালিকাই দীর্ঘ থাকে। শিশুদের ম্যাগি, পাউরুটি, কর্নফ্লেক্সের মত খাবার বেশি খাওয়ানো হয়। তাই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।
উপরন্তু, এখন অধিকাংশ শিশু-কিশোর খেলাধুলা করতে অভ্যস্ত না কিংবা তাদের যথেষ্ট সুযোগ নেই। দিনের অধিকাংশ সময়েই এক জায়গায় বসে হয় পড়াশোনা করা কিংবা স্মার্টফোনে ডুবে থাকে। এই অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ফলেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
[206162]
যেসব সতর্কতা জরুরি
১) শিশুদের মাঠে গিয়ে খেলার প্রতি উৎসাহিত করে তুলুন। প্রতি দিন অন্তত ঘণ্টাখানেক দৌঁড়ঝাপ করা ভীষণ জরুরি। তাই চেষ্টা করুন তাদের নিয়ে একটু খেলাধুলা করতে। এতে স্বাস্থ্য ভালো হওয়ার পাশাপাশি স্মার্টফোনে আসক্তিও কমবে।
২) শিশুর ওজন বেড়ে গেলেই সতর্ক হোন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে শিশুর উপযুক্ত একটি ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে পারেন।
৩) কেক, চকোলেট কুকিজ় কিংবা মিষ্টি জাতীয় খাবার বরাবরই শিশুদের বড় প্রিয়। তবে শিশুদের অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ায় লাগাম টানা জরুরি। এ ছাড়া তৈলাক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার উপরেও লাগাম টানতে হবে।
সূত্রঃ WHO, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন, মায়ো ক্লিনিক।
এমটিআই