সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ, রিং নিয়ে সংকট থাকছেই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩, ১০:৫৯ পিএম

ঢাকা : হৃদরোগের জরুরি চিকিৎসায় ব্যবহৃত রিংয়ের (স্টেন্ট) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দাম নির্ধারণ ও এর প্রতিবাদে আমদানিকারকদের ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ রোগীরা। তবে দ্রুত এ সংকট কাটার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রিংয়ের দাম ও চলমান অস্থিরতা নিয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে দুই ঘণ্টার অধিক সময় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে জাতীয় কমিটি ১৩ সদস্যের বাইরে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে এবারও হার্টের রিং সরবরাহ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডাকা হয়নি। আর এ বৈঠকেও কোনো সমাধানে আসতে পারে পরেনি জাতীয় কমিটি।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর হার্টের (রিং) সর্বোচ্চ খুচরা দাম নির্ধারণ করে। যা আগের চেয়ে কম। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বর থেকে নির্ধারিত দামে স্টেন্ট বিক্রি করতে হবে। বাংলাদেশে মোট ২৭টি কোম্পানি রিং আমাদানি করে। এর মধ্যে তিনটি আমেরিকান ও ২৪টি ইউরোপীয়। নতুন দাম নির্ধারণীতে যুক্তরাষ্ট্রের তিন কোম্পানির ক্ষেত্রে ‘মার্কআপ ফর্মুলা’ অনুসরণ করা হলেও রিং সরবরাহকারী ইউরোপের ২৪টি কোম্পানিকে এ তালিকায় রাখা হয়নি বলে অভিযোগ কোম্পানিগুলোর।

ফলে এর প্রতিবাদে সেদিন থেকেই হার্টের রিং সরবরাহ ও ব্যবহার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউরোপের ২৪টি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। যারা বাংলাদেশ মেডিকেল ডিভাইস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত। দাম নির্ধারণে বৈষম্যের অভিযোগ এনে সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট ডাক দেয়। যা এখনো চলমান রয়েছে।

[214325]

এ অবস্থায় সংকট নিরসনে নতুন করে বৈঠকে বসে রিংয়ের দাম নির্ধারণে জাতীয় পরামর্শক কমিটি। তবে এতে কোনো সমাধান আসেনি।

এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুল আলম বলেন, ওনারা তো হাইকোর্টে গেছেন। ২ তারিখে কোর্ট খুলবে। তখন আদালত যে ধরনের নির্দেশনা দেবে তার আলোকে প্রয়োজনীয় কমিটি বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। যে প্রাইস ফিক্সড করা হয়েছে, সেটা জনস্বার্থে জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত তারা যেহেতু বলছে দাম সঠিক নয়, সে হিসেবে অভিযোগ করা হয়েছে। ফলে কোর্ট খোলার পর নির্দেশনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জাতীয় কমিটি নতুন কোনো নির্দেশনা দেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনার পর আর কোনো সিদ্ধান্তের দরকার নেই। কারণ সরকার যেটা করেছে জনস্বার্থেই করেছে। রিং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ক্রাইসিসের কথা বলছে, সেটা আর্টিফিসিয়াল ক্রাইসিস। বৈঠকে বিশেষজ্ঞরাও সেটাই জানিয়েছেন।

কোম্পানির প্রতিনিধিদের বৈঠকে না রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তাদের দাবি সঠিক মনে হয়নি। যেহেতু তাদের দাবি সঠিক মনে হয়নি, তাই এটা শুধু জাতীয় কমিটির এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে করা হয়েছে।

এদিকে বৈঠকের বিষয়ে ইউরোপীয় রিং সরবরাহকারীরা জানান, ঔষধ প্রশাসন অধিপ্তরের জাতীয় কমিটির বৈঠকে তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার সুরাহা করার কোনো আলোচনা হয়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি। তারা বলছে, কোর্টের যে রায় হবে, তার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আমরাও মনে করি কোনো সিদ্ধান্তে না আসাটাই স্বাভাবিক। যে সিদ্ধান্তের কারণে আজকের এই সংকট, সেই কমিটি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে তাদের আগের সিদ্ধান্তই ভুল প্রমাণিত হবে। তাই তারা কোর্টের সিদ্ধান্তের ওপরেই পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে।

এমটিআই