ঢাকা: বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি করেছে আর্মেনিয়া। চুক্তি করার পর আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগ (এনএসএস)। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করতে একটি চক্র ওই হত্যার ষড়যন্ত্র করে বলে জানিয়েছে এনএসএস।
শনিবার এনএসএস এক বিবৃতিতে জানায়, জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের সাবেক প্রধান আর্তার ভ্যানেৎসিয়ান, বিপালিকান পার্টির সাবেক সংসদীয় নেতা ভাহরাম বাগদাসারিয়ান ও যুদ্ধে স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করা আশোত মিনাসাসায়ানকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে।
ছয় সপ্তাহ যুদ্ধের পর আজারবাইজানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তির হয়। এর পর গত মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
গত সেপ্টেম্বরের শেষদিকে নাগোরনো-কারাবাখের দখল নিয়ে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সেনাবাহিনীর মধ্যে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকেই দেশ দু’টির মধ্যে এই বিবাদ চলছিল।
আর্মেনিয়া জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহের লড়াইয়ে তাদের ২ হাজার ৩১৭ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। তবে আজারবাইজানের পক্ষ থেকে হতাহতের কোনও তথ্য জানানো হয়নি। চলতি সপ্তাহের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন, প্রতিবেশী দেশ দু’টির মধ্যে সহিংসতায় দুই পক্ষ মিলিয়ে চার হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া হয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি।
বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটিকে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের বলে স্বীকৃতি দেয়া হলেও এতদিন তার নিয়ন্ত্রণ ছিল আর্মেনীয় নৃ-গোষ্ঠীর হাতে। নব্বইয়ের দশকের যুদ্ধের পর অঞ্চলটির দখল নেয় আর্মেনিয়া। নাগোরনো-কারাবাখ নিজেদের স্বাধীন ঘোষণা করলেও তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি। ফলে আইনগতভাবে সেটি আজারবাইজানের অধীনেই থেকে যায়।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর হঠাৎই ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয় আর্মেনীয়-আজারি সেনাদের মধ্যে। একাধিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মাসব্যাপী চলে এ লড়াই। অবশেষে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় গত সপ্তাহে আর্মেনিয়া সরকার নাগোরনো-কারাবাখের দখল ছেড়ে দিতে রাজি হলে একপ্রকার বিজয় নিশ্চিত হয় আজারবাইজানের।
সোনালীনিউজ/এমএইচ