ঢাকা : টিকা নেবার পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কিছু ঘটনার পর জার্মানিতে ৬০ বছরের কম বয়সি মানুষের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা করোনা টিকা বন্ধ রাখা হচ্ছে৷ তা সত্ত্বেও টিকাদান কর্মসূচিতে বিঘ্নের কারণ দেখছে না সরকার৷
অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির করোনা টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ও সংশয় যেন কিছুতেই কাটার নয়৷ করোনা ভাইরাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে তেমন চর্চা হচ্ছে না৷ বরং কিছু মানুষের মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে একাধিক দেশ নির্দিষ্ট বয়সের মানুষের জন্য এই টিকা দেওয়া হয় বন্ধ করছে অথবা সতর্কতা জারি করছে৷ মঙ্গলবার জার্মানি আবার অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত নিলো৷
জাতীয় ভ্যাকসিন কমিশনের মূল্যায়নের পর ফেডারেল ও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা বুধবার (৩১ মার্চ) থেকে শুধু ষাটের বেশি বয়সের মানুষের জন্য এই টিকা দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন৷ সুযোগ পেলে ষাটের কম বয়সের মানুষও এই টিকা নিতে পারেন, তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ শুনে ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে তাদের সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷
অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির টিকা নেবার পর জার্মানিতে কিছু মানুষের তীব্র প্রতিক্রিয়া, এমনকি মৃত্যুর ঘটনার পর জরুরি ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো৷ টিকা নেবার চার থেকে ষোল দিনের মধ্যে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে৷ মোট ১৬টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে নয় জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এর মধ্যে ১৪টি ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৬৩ বছর বয়সি নারীর শরীরে এমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ এখনো পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত কম বয়সি স্বাস্থ্যকর্মী ও শিক্ষকরা আদৌ টিকা নেবার সুযোগ পাচ্ছেন৷ জাতীয় ভ্যাকসিন কমিশনের মতে, রক্ত জমাট বাঁধার মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত বিরল হলেও তার ফলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে৷ বার্লিন ও মিউনিখ শহর কর্তৃপক্ষ সবার আগে ষাটের কম বয়সের মানুষের জন্য টিকা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়৷ তারপর গোটা দেশেই সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়৷
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেন, এই সিদ্ধান্ত একদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির করোনা টিকার জন্য বড় ধাক্কা হলেও অন্যদিকে ষাটের বেশি বয়সের মানুষকে আরও দ্রুত টিকা দেওয়া সম্ভব হবে৷ তিনি সেই বয়সের মানুষদের উদ্দেশ্যে সেই সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান৷
অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির টিকা নিয়ে সংশয়ের উল্লেখ করে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, এমন সিদ্ধান্তের ফলে করোনা ভাইরাসের টিকাগুলির উপর আস্থা বাড়া উচিত৷ কারণ প্রত্যেক বার সংশয় দেখা দিলেই প্রত্যেকটি ঘটনা ভালো করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে৷ তার মতে, এমন খোলামেলা এবং স্বচ্ছভাবে পরিস্থিতি সামলানো সবচেয়ে ভালো পথ৷ সুযোগ পেলে ম্যার্কেল নিজে অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির করোনা টিকা নেবেন বলে আবার অঙ্গীকার করেন৷
চ্যান্সেলর ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও সার্বিকভাবে জার্মানিতে করোনা টিকাদান কর্মসূচির ধীর গতি আরও চাপের মুখে পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তা সত্ত্বেও সরকার চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য টিকার সুযোগ দেবার লক্ষ্যমাত্রায় অনড় রয়েছে৷ এপ্রিল মাস থেকে একাধিক কোম্পানির টিকার সরবরাহ বাড়ার কারণে সরকার এ ক্ষেত্রে আশাবাদী৷
সোনালীনিউজ/এমটিআই