ঢাকা : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই একমাত্র পথ। শুক্রবার (২১ মে) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জা-ইনের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়ে আমার প্রতিশ্রুতিতে কোনো পরিবর্তন হবে না। কোনো অবস্থাতেই না, মোটেও না। তবে আমি স্পষ্টভাবে বলছি, দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়েই ওই অঞ্চলে সঙ্কট নিরসন সম্ভব। এটিই একমাত্র জবাব, এটিই একমাত্র পথ। আমি বিশ্বাস করি, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার সঙ্গে বেঁচে থাকা অধিকার রয়েছে। স্বাধীনতা, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র উপভোগের সমান অধিকার রয়েছে। তাই আমি জোর দিয়ে বলছি, সেখানে ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন জরুরি।
বাইডেন বলেন, ইসরায়েলের প্রতি ডেমোক্র্যাটদের অব্যাহত সমর্থন রয়েছে। যদিও আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ ও রাশিদা তাইবের মতো প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধিরা ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজায় সহায়তা পাঠানোর কথা উল্লেখ করে বলেন, গাজার জনগণের জন্য দ্রুত মানবিক সহায়তা প্রদান ও গাজা পুনর্নির্মাণ চেষ্টায় আন্তর্জাতিক সহায়তা জোরদারে মার্কিন প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুদ্ধবিরতির পর গাজা ও ইসরায়েলের উপকূলীয় এলাকায় শান্তি ফিরেছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, সংঘাত বন্ধ করে শান্তি ফেরানোয় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ। তিনি কথা রেখেছেন, সংঘাত থামিয়ে শান্তি এনেছেন।
শুক্রবার বাইডেন নেতানিয়াহুকে বলেন, পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা জরুরি। ইসরায়েলি নাগরিকরা আরব বা ইহুদি যাই হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে সমান আচরণের বিষয়ে জোর দেয়।
এদিকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সহায়তার প্রথম কনভয় পৌঁছেছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেগুলো অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে পৌঁছায়।
জানা গেছে, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর গাজা ভূখণ্ডে প্রবেশের জন্য ইসরায়েল কেরেম শ্যালন ক্রসিং খুলে দেয়। এরপরই জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি সহায়তা সংস্থার দেয়া জরুরি ওষুধ, খারার ও জ্বালানি নিয়ে ভূখণ্ডটিতে প্রবেশ করে বেশ কয়েকটি ট্রাক।
ইসরায়েলি হামলার সময় বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর আবারও নিজ নিজ আবাসস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে তাদের বেশিরভাগেরই বাড়ি-ঘর হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, বিধ্বস্ত এসব বাড়ি-ঘর পুনর্নির্মাণ করতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ১১ দিনের এই ইসরায়েলি হামলায় গাজা ভূখণ্ডে প্রায় ২৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শতাধিক নারী ও শিশু রয়েছেন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের হামলায় হামাসের অন্তত ১৫০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। হামাস অবশ্য নিজেদের যোদ্ধাদের হতাহতের কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
ইসরায়েলের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ জানিয়েছে, হামাসের রকেট হামলায় ১২ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুইজন শিশুও রয়েছে। এছাড়া ১১ দিনের এই যুদ্ধে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দিকে প্রায় চার হাজার রকেট ছুঁড়েছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ