ঢাকা : আগের দিন হাইকোর্টে মামলা করতে গিয়ে গ্রেফতার হন শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের প্রধান মইদুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বদলি ঠেকাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে বিষপান করেন পাঁচ শিক্ষিকা।
কলকাতার সল্টলেকের বিকাশ ভবনে শিক্ষা দফতরের সামনে এভাবেই তাদের বদলি করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বদলির বিষয়ে নিজেদের আপত্তির কথা বলতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। তার মধ্যেই পাঁচ শিক্ষিকা তরল বিষ খেয়ে নেন এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই শিক্ষিকার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। কিন্তু পরে সবাই স্থিতিশীল আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
এই চুক্তিবদ্ধ শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেশ কিছুদিন হলো আন্দোলন করছেন। তারা মূলত স্থায়ী চাকরির দাবিতেই আন্দোলন করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি আন্দোলনরত শিক্ষিকাদের বদলি করা শুরু হয়। মঙ্গলবার বিষপান করা পাঁচজনের একজনকে শালবনী থেকে বদলি করা হয়েছে জলপাইগুড়ির একটি হিন্দি স্কুলে। আরেকজনকে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ থেকে বদলি করা হয়েছে জলপাইগুড়িতে।
শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের প্রধান মইদুল ইসলাম বলেছেন, তাদের কথা কেউ শুনছেন না। তারা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাড়িতে কয়েকবার গিয়েও মন্ত্রীর দেখা পাননি। সোমবার তিনি হাইকোর্টে মামলা করতে যাচ্ছিলেন। তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার প্রতিবাদেও মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছিল। শিক্ষিকারা আন্দোলন করছেন বলেই তাদের উত্তরবঙ্গে বদলি করা হয়েছে।
সূত্র জানাচ্ছে, বিষ পান করা শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে এখন শিক্ষা দফতর ও পুলিশ ব্যবস্থা নিতে চলেছে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, সবকছুরই একটা রীতি-পদ্ধতি আছে। এর আগে আন্দোলনের সাথে জড়িত কেউ কেউ জলপথে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি পর্যন্ত চড়াও হয়েছিলেন। মঙ্গলবার যে ঘটনা ঘটেছে, তা আগেও করার চেষ্টা হয়েছে। একবার তার বাড়ির সামনে ও অন্যবার নবান্নে। তার দাবি, আন্দোলনের নামে হঠকারী কিছু করলে তাতে আখেরে লাভ হয় না।
তৃণমূল বলেছে, রাজ্য সরকার এই চুক্তিবদ্ধ শিক্ষকদের বেতন পাঁচ হাজার ৪০০ থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার ১৯০ টাকা করেছে। কিন্তু এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নেয়ার সময় কখনোই স্থায়ী করা হবে বলা হয়নি। অথচ তাদের পুরো আন্দোলনটাই স্থায়ী করার দাবিতে।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, প্ররোচনা থেকেই এই কাজ করেছেন শিক্ষিকারা। রাজ্যে বদলি নীতি নতুন কিছু নয়। তবে এই ধরনের ঘটনা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। রাজ্য সরকারের উপর তারা আস্থা রাখুন এবং শিক্ষিকারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য়ের বক্তব্য, এর আগে কোনো সরকারের আমলে শিক্ষিকারা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে চায়নি। পাঁচ লাখ পদ খালি। তাহলে তাদের স্থায়ী করতে বাধা কোথায়? এক নাট্যকার শিক্ষামন্ত্রী হওয়ায় অনেক আশা ছিল। এখনো প্রত্যাশা করছি, তিনি সব ঠিক করবেন।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মতে, শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করলেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী এক কথা বলেন, মন্ত্রণালয় আরেক কথা বলে। কোনো কাজের কাজ হয় না। সূত্র : ডয়চে ভেলে
সোনালীনিউজ/এমটিআই