ঢাকা : কখনো জনসম্মুখে দেখা যায়নি তালেবানের শীর্ষ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুনজাদাকে। ২০১৬ সাল থেকে তালেবানের সুপ্রিম কমান্ডারের দায়িত্বের পালন করলেও বিশ্ববাসীর কাছে আখুনজাদার পরিচয় বলতে কেবল একটি ছবি।
চলতি মাসের মাঝামাঝি তালেবান দ্বিতীয় দফায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর ফের আখুনজাদা কোথায় আছেন সেই প্রশ্নটি ঘুরেফিরে আসছে। এমনকি দীর্ঘ দুই দশক পর তালেবান ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সংগঠনের শীর্ষ কয়েকজন নেতা দেশে ফিরলেও আখুনদাজা আড়লেই রয়ে গেছেন।
তবে শিগগিরই তালেবানের শীর্ষ এই নেতা প্রকাশ্যে আসছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। সম্প্রতি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আশা করা যায়, আমরা শিগগিরই তাকে দেখতে পাবো।
অবশ্য শীর্ষ নেতাদের আড়ালে রাখার বিষয়টি তালেবানের জন্য নতুন নয়। তালেবানের অন্যতম নেতা মোল্লা মুহাম্মদ ওমরও এভাবে আড়ালে থাকার জন্য সুপরিচিত। তালেবানের প্রথম দফার শাসনামলেও তাকে খুব কমই কাবুলে আসতে দেখা গেছে। বেশির ভাগ সময় কান্দাহারেই কাটাতেন মোল্লা ওমর। এমনকি সফররত বিদেশি প্রতিনিধিদের সাথেও দেখা করতে চাইতেন না তিনি।
মোল্লা ওমরের কাছ থেকেই আখুনজাদা এরকম নেপথ্যে থাকার অভ্যাস পেয়েছেন বলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রধান লরেল মিলার জানিয়েছেন।
তবে নিরাপত্তার জন্যও আখুনজাদা নিজের অবস্থান জানান না বলে জানিয়েছেন লরেন।
এদিকে, আখুনজাদার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তিনি করোনা আক্রান্ত কিংবা বোমা হামলার মারা গেছেন বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
তবে একবার জনসম্মুখে আসার পর আখুনজাদা হয়তো নিজেকে এভাবে আড়ালে রাখার চর্চা বন্ধ করে দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন লরেন।
তালেবান নেতা আখতার মানসুর মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর ২০১৬ সালের ২৫ মে থেকে তিনি তালেবানের সুপ্রিম কমান্ডারের দায়িত্বে রয়েছেন।
আশির দশকে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তবে সামরিক নেতার তুলনায় একজন ধর্মীয় নেতা হিসেবে তার পরিচিতি বেশি।
আখুনদাজা ১৯৯০ এর দশকে আফগানিস্তানের শরিয়া আদালতের প্রধান ছিলেন। আখুনদাজা বয়স ৬০ বছর বলে ধারণা করা হয় এবং জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি আফগানিস্তানে কাটিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন তিনি কোয়েটা শুরার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে চলেন। এরা মূলত পাকিস্তানের কোয়েটাভিত্তিক আফগান তালেবান নেতা।
দলের সুপ্রিম লিডার হিসেবে রাজনৈতিক, সামরিক ও ধর্মীয় বিষয়ের প্রধান আখুনদাজা। উচ্চশিক্ষিত আখুনজাদা সেই অর্থে তালেবানের হয়ে জঙ্গি কার্যকলাপে অংশ নেয় না। বরং ইসলামের নানা ব্যাখ্যার কাজ করে থাকেন তিনি। যে সাত নেতার হাতে আফগানিস্তানের দায়িত্ব বর্তাবে বলে মনে করা হচ্ছে আখুনজাদা তাদের অন্যতম।
সোনালীনিউজ/এমটিআই