ঢাকা : খাদ্য সামগ্রী ও করোনাভাইরাস টিকাসহ আফগানিস্তানকে ২০ কোটি ইউয়ান (৩ কোটি ১০ লাখ ডলার) অর্থমূল্যের সহায়তা দেবে চীন। দেশটি তালেবান সরকারের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখতে প্রস্তুত- বেইজিং থেকে এমন ঘোষণা আসার পর এই অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি এলো।
চীন সরকার বলেছে, আফগানিস্তানে একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন সেখানে ‘শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটি দরকারি পদক্ষেপ’।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তান, ইরান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমিনিস্তানের সাথে এক বৈঠকের পর চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আফগানিস্তানের জন্য এই সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি চীনের মিত্র হিসেবে পরিচিত এই দেশগুলোকে তিনি আহ্বান জানান আফগানিস্তানকে সহায়তার জন্য।
বেইজিং জানিয়েছে, তারা আফগানিস্তানকে ৩০ লাখ ডোজ টিকা দেবে।
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার পর সম্প্রতি একটি অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভা গঠন করেছে তালেবান। দেশটিকে ‘ইসলামি আমিরাত’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি আরো বহু দুরের ব্যাপার।
তবে চীন খুব দ্রুতই তালেবানের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে চীন বেশ কঠোর সমালোচনা করে আসছে। বেইজিং বলেছে, মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে ‘ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ’ চালিয়েছে।
চীন সরকারের অবস্থান তুলে ধরে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান দখলের প্রথম দিন থেকে সেনা প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত আফগান জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। কোনো উস্কানি ছাড়া সামরিক হস্তক্ষেপ ও নিজের মূল্যবোধ অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার যে কী পরিণতি হতে পারে, গত দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে যা করেছে সেটি এর বড় উদাহরণ।
অন্যদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পুনর্গঠন ও বিনিয়োগে চীনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করেছে তালেবান। গোষ্ঠীটির সাথে সম্পর্ক তৈরি করার জন্য বেইজিং থেকেও জোরালোভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার আগেই, জুলাই মাসে তালেবান বাহিনীর প্রতিনিধিদের সফরের আমন্ত্রণ জানায় চীন। তখনই চীনের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানকে অর্থনৈতিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
একইসাথে আফগানিস্তান যাতে সন্ত্রাসীদের কেন্দ্র হয়ে না ওঠে সেটিও মনে করিয়ে দেয় চীন। তবে আফগানিস্তানের সাথে এই অংশীদারিত্বের বিষয়ে চীন তার নিজের দেশের ভেতরেই সবাইকে আশ্বস্ত করতে পারেনি। চীনের জনগণের মধ্যে অনেকেই তালেবানের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। -বিবিসি
সোনালীনিউজ/এমটিআই