ঢাকা : যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ জনে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে আঘাত হানা এ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে শুধু কেনটাকি নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও পাঁচটি অঙ্গরাজ্য। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। গত শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ও ভোরের দিকে আঘাত হানা টর্নেডোকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
টর্নেডোর আঘাতে বহু বাড়ি-ঘর ও স্থাপনা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। অন্যদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, শক্তিশালী টর্নেডোর আঘাতে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি প্রদেশেই টর্নেডোতে কমপক্ষে ৭০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে একটি মোমবাতি কারখানাতেই নিহত হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ। এছাড়া শুক্রবার রাতের এই ঝড়ের আঘাতে নিহতের সংখ্যা আরও বেড়ে ১০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
টর্নেডোতে বিধ্বস্ত ওই মোমবাতি কারখানাটি যুক্তরাষ্ট্রের মেফিল্ড শহরে অবস্থিত। গত শুক্রবার রাতে হওয়া ওই টর্নেডো কারাখানাটিতে সরাসরি আঘাত হানে এবং এতেই ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। বিবিসি বলছে, কারখানার ধ্বংসস্তুপের মধ্যে এখনও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
এছাড়া টর্নেডোর পর এখন পর্যন্ত আরও ১১০টি কারাখানা থেকে ৪০ জনেরও বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেসিয়ার বলছেন, বিধ্বস্ত কারাখানাগুলোর ধ্বংসস্তুপ থেকে এখন কাউকে জীবিত উদ্ধার করা হলে সেটি হবে অলৌকিক কোনো ঘটনা।
তিনি আরও জানিয়েছেন, মেফিল্ড শহরের চারিদিকে ৩৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এটি অবর্নণীয়। এ রকম খারাপ পরিস্থিতি আমি জীবনে কখনও দেখিনি।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি হপকিন্স কাউন্টিতে ঝড়ের কারণে একটি ট্রেনও লাইনচ্যুত হয়ে গেছে।
এদিকে শুক্রবার রাতের ওই টর্নেডোতে কেন্টাকি ছাড়াও অন্য অঙ্গরাজ্যগুলোতে কমপক্ষে আরও ১২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ইলিনয়িস অঙ্গরাজ্যে ই-কমার্স প্লাটফর্ম অ্যামাজানের একটি ওয়্যারহাউসে ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বড়দিনের উৎসবের আগে তারা সেখানে অর্ডারকৃত পণ্য ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত করছিলেন।
অন্যদিকে শুক্রবার রাতে আঘাত হানা টর্নেডোকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, দুর্যোগপীড়িত মানুষকে সহায়তা করতে সম্ভব সবকিছুই করবে তার সরকার।
এছাড়া টর্নেডোর পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতোমধ্যেই ফেডারেল ইমারজেন্সি ডিজাস্টার ডিক্লারেশনে স্বাক্ষর করেছেন। এর ফলে কন্টোকি অঙ্গরাজ্যের জন্য অর্থ ছাড় করতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। টর্নেডোর আঘাতে এই অঙ্গরাজ্যটিই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ