ঢাকা : ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে কিয়েভ ছেড়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এই আলোচনার সঙ্গে জড়িত দুজন ব্যক্তির বরাতে বিষয়টি জানিয়েছে এনবিসি নিউজ।
পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ৫০ মাইল দূরে পশ্চিম ইউক্রেনের লাভিভ শহরে জেলেনস্কির সরে আসার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিকে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে আলাপ করেছেন।
এর আগে ইউক্রেন সীমান্তে ক্রমবর্ধমান সামরিক তৎপরতার মুখে ইউক্রেনে আগ্রাসনের আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র ১২ ফেব্রুয়ারি কিয়েভে তার দূতাবাসের বেশির ভাগ কর্মীকে সরিয়ে নিয়েছিল এবং লাভিভে দূতাবাস কার্যক্রম স্থানান্তর করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, এবার কিয়েভ আক্রান্ত হতে পারে।
রাশিয়া কিয়েভ আক্রমণ করলে জেলেনস্কির পরিকল্পনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের আলোচনার বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত মন্তব্য করতে অপারগতার কথা জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন মুখপাত্র।
তবে জেলেনস্কির একজন মুখপাত্র, কিয়েভ থেকে সম্ভাব্য প্রস্থান ও লাভিভে স্থানান্তরের বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনীয় সরকারের নিম্নস্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে জানা নেই সেই মুখপাত্রের।
এদিকে রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ অধ্যুষিত ইউক্রেনের দুটি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব ইউক্রেনে ‘শান্তি বজায় রাখতে’ সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার এ কর্মকাণ্ডে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘোষণাটি ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিনা প্ররোচনায় লঙ্ঘন’ এবং এ ঘটনায় জাতিসংঘ ইউক্রেনের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের ডাককেও সমর্থন করেছে দেশটি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘শক্তিশালী ও কার্যকর’ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। সর্বশেষ জাপানও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়া ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের মূল ভূখণ্ডে যুক্ত করে রাশিয়া। সে সময় থেকেই পূর্ব ইউক্রেনে সংঘাত চলছে। ইউক্রেন সেনা ও মস্কো সমর্থিত বিদ্রোহীদের সংঘাতে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ