কিয়েভে রুশ হামলা বন্ধ হয়েছে, রাজধানীতে কারফিউ জারি

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২, ১২:২০ পিএম
কিয়েভে লড়াইয়ের পর অবিস্ফোরিত গোলা সরাচ্ছে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা। ছবি : বিবিসি

ঢাকা : রাশিয়ার বাহিনী কিয়েভের দিকে আর অগ্রসর হচ্ছে না বলে জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টা দাবি করেছেন, মস্কো আক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রুশ সেনা নিহত ও আহত হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ বলেছেন, আমরা কিয়েভের চারপাশ থেকে শত্রুকে আঘাত হানছি। শত্রুপক্ষও আপাতত সেখান থেকে এগুচ্ছে না।

তবে ইউক্রেনের এই দাবির পক্ষে রাশিয়া থেকে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া ইউক্রেনের দাবি করা আহত ও নিহতের সংখ্যা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলেও জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।

তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজধানী কিয়েভে আগামীকাল সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।  

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এই ঘোষণা দিয়ে বলা হয়েছে, কারফিউ চলাকালীন রাস্তায় থাকা সব বেসামরিক নাগরিককে শত্রুপক্ষের সদস্য হিসাবে বিবেচনা করা হবে।

তবে তার আগে মেয়রের কার্যালয় থেকে দেওয়া এক ঘোষণায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল যে, প্রতিদিন স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার আগে কারফিউ প্রত্যাহার করা হবে না।

গত শুক্রবার গভীর রাত থেকে কিয়েভে বিমান হামলা চালায় রুশ বাহিনী। রাতে বিস্ফোরণের পাশাপাশি গোলাগুলির শব্দে নগরীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

গতকাল এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রাতে তাকে ধরে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল রাশিয়া। কিন্তু সেই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছেন ইউক্রেনের সেনারা। কিয়েভ ও আশপাশের এলাকার নিয়ন্ত্রণ ইউক্রেন সেনাদের হাতেই রয়েছে। মাতৃভূমি রক্ষার সাহস আমাদের আছে। ইউরোপ রক্ষার সাহসও আমাদের রয়েছে।

যদিও গতকাল রাশিয়ার পার্লামেন্ট ডুমার স্পিকার ভিয়াচেস্লাভ ভোলোদিন বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আগের দিনই রাজধানী কিয়েভ ছেড়েছেন। সঙ্গীদের নিয়ে তিনি পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী লিভ শহরে গেছেন। তার যেসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসছে, সেগুলো আগে ধারণ করা।

রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম স্পুতনিক এ খবর দিলেও জেলেনস্কির রাজধানী ত্যাগের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো কিছু জানায়নি।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে শান্তি রক্ষায় সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়।

পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে। এখন ইউক্রেনে একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ শুরু সময়ের ব্যাপারমাত্র।

এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়ে পুতিন পূর্ব ইউক্রেনে থাকা ইউক্রেনের সেনাদের অস্ত্র ত্যাগ করে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।- বিবিসি ও ডেইলি স্টার

সোনালীনিউজ/এমটিআই