ঢাকা : জার্মানির কিছু রাজ্যে উচ্চ সংক্রমণ হার সত্ত্বেও করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করেছে দেশটি। গত দুই বছরের মধ্যে প্রথম বারের মতো দেশটির মানুষ মাস্ক ছাড়াই এখন দোকানে যেতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জার্মানিতে শুধু বিমান এবং দূর পাল্লার ট্রেনে চলাচলের ক্ষেত্রেই মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা থাকছে। তবে রাজ্য সরকার চাইলে হাসপাতাল, সেবাকেন্দ্র এবং গণপরিবহণে মাস্ক পরার নিয়ম চালু রাখতে পারবে।
গত শুক্রবারই বার্লিনে ফেডারেল সরকারে পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বেশিরভাগ রাজ্য রোববার থেকেই তা কার্যকর করেছে। তবে দেশটির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে কোনো কোনোটি অবশ্য এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল।
সিদ্ধান্তে সহমত প্রকাশ করা রাজ্যগুলোতে দোকানে মাস্ক পরতে হবে কিনা সেটি দোকান মালিকের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার অনেক দোকান মালিক জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্রেতা মাস্ক পরেই কেনাকাটা করেছেন।
সংক্রমণের ঝুঁকিতে কর্মীরা:
বড় সুপারশপগুলোর অনেকেই এরইমধ্যে ক্রেতাদের জন্য মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে। রেভে, আলডি, লিডল, এডেকা, সুইডিশ আসবাবের দোকান ইকেয়া, বইয়ের দোকান থালিয়া এবং ফ্যাশন ব্র্যান্ড এইচ এন্ড এম ও প্রাইমার্ক জানিয়েছে তাদের দোকানে যেতে আর মাস্ক পরিধানের প্রয়োজন নেই।
তবে কিছু নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এবং তাদের কর্মচারীরা নিয়ম শিথিলের কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে একটি ট্রেড ইউনিয়নও৷
পরিবর্তন আসছে কোয়ারান্টাইন বিধিতেও:
শুধু মাস্ক নয়, কোয়ারান্টিনের নিয়মও শিথিল করেছে জার্মানির সরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কার্ল লাউটারবাখ বলেছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আগামী মাস থেকে আর কোয়ারান্টিনে থাকার জন্য বাধ্য করা হবে না৷
তবে কেউ আক্রান্ত হলে তিনি যাতে স্বেচ্ছায় আলাদা থাকেন সেই পরামর্শও দিয়েছেন তিনি৷ লাউটারবাখ বলেন, ‘‘মে মাসের ১ তারিখ থেকে কোয়ারান্টিনের নিয়ম বদলে যাচ্ছে, তবুও আমি আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা থাকার পরামর্শ দেবো
তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা এই আইনের বাইরে থাকবেন৷ করোনা আক্রান্ত হলে তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচ দিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে।
২০২০ সালে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত যেসব দেশে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, জার্মানি তাদের মধ্যে অন্যতম। ৮ কোটি ৪২ লাখ ৯৪ হাজার মানুষ অধ্যুষিত জার্মানিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৫ জন এবং কোভিডজনিত অসুস্থতায় দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে মোট ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৬৯ জনের।
এর মধ্যে মঙ্গলবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৬ জন এবং এই রোগে মারা গেছেন ২৫৬ জন।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ