ঢাকা : চীনের হুমকি উপেক্ষা করে তাইওয়ান পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। এনিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, চীন পেলোসির বিমান ভূপাতিত করলে ভয়াবহ প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এর আগে পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফরে রাজধানী তাইপের যে বিমানবন্দরে নামবেন, সেই তাইওয়ান বিমানবন্দর বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চিঠি এসেছে।
কে বা কারা এ হুমকি দিয়েছে, সে সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল মঙ্গলবার সকালে চিঠি পাওয়ার পর তাইওয়ান বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটি নেটওয়ার্ক।
এদিকে, ন্যান্সি পেলোসির স্বশাসিত তাইওয়ান সফর ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের গত কয়েকদিন ধরে চলমান উত্তেজনার মাঝে উভয়পক্ষ দক্ষিণ চীন সাগরে ব্যাপক সামরিক শক্তি মোতায়েন করেছে। চীন সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুদ্ধজাহাজ ও তাইওয়ানের আকাশসীমার কাছে বিমান মোতায়েন করেছে বেইজিং। একই সঙ্গে প্রয়োজনে পেলোসির বিমানকে প্রয়োজনে গুলি করে ভূপাতিত করারও হুমকি দিয়েছে চীন। গতকাল চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের যে রাজনীতিকরা আগুন নিয়ে খেলবেন তাদের পরিণতি ভালো হবে না।
অন্যদিকে, ফক্স নিউজকে নিউত গিংরিচ বলেছেন, আমি মনে করি, স্পিকার পেলোসির তাইওয়ান সফরের আর কোনো বিকল্প নেই। এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি চারদিকে নাচছে এবং হুমকি দিচ্ছে। পেলোসিকে তাইওয়ানে যেতেই হবে। কারণ এখন পিছিয়ে যাওয়ার মানে স্বৈরাচারী চীনের আক্রমণাত্মক ধমক দেওয়ার মনোভাবকে উৎসাহিত করা। আমি মনে করি সেটি হবে বিপর্যয়কর।
সাবেক এই মার্কিন স্পিকার বলেন, তিনি তাইওয়ানে পেলোসিকে শিগগিরই দেখার আশা করছেন। আর সেই সময় চীনা কমিউনিস্টরা শান্ত হবেন বলে তিনি মনে করেন। পেলোসির তাইওয়ান সফরের বিরুদ্ধে চীনের সব ধরনের হুমকিকে অযথা তর্জন-গর্জন এবং অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গিংরিচ বলেছেন, মূল বিষয় হলো চীন কখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে লড়াই করবে না। তারা হাউসের স্পিকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেবে না। আর এই সমস্ত হুমকি একেবারে অর্থহীন। আসলে তারা কিছুই করবে না।
চীন ন্যান্সি পেলোসির বিমানে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করার হুমকি দিয়েছে বলে ফক্স নিউজের উপস্থাপক সিন হ্যানিটি গিংরিচের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, সবচেয়ে খারাপ কিছু যদি ঘটে, তখন সেটি হবে তারা বিমানে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছে। আর তা হবে যুদ্ধাপরাধ। তখন ভয়াবহ প্রতিশোধ নেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না। পেন্টাগনের দুর্বলতা, সত্যিকারের জেগে ওঠা এবং কিছু নির্বোধের মতো আচরণ থাকলেও লোকজন ভুলে যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের এখনো একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী রয়েছে।
গিংরিচ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধমক দেওয়ার মতো শক্তিশালী অবস্থানে নেই চীন। যা চীনকে খুব দ্রুত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে। আমরা অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং অন্যান্য স্থানে আমাদের মিত্রদের সাথে নিয়ে অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে চীনকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারব। চীন যদি রপ্তানি করতে না পারে, তাহলে ভেঙে পড়তে শুরু করবে এবং শহরে শহরে বেকারত্ব শুরু হবে।
সাবেক এই মার্কিন হাউস স্পিকার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনা হুমকির কাছে নতি স্বীকার করে, তাহলে তা চীনের তাইওয়ান দখলের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আরো জোরালো করবে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই