ঢাকা: একটি উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকা বজায় রাখতে ভারতের অংশীদারদের বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।
[201797]
এক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করেন, আমার প্রশ্ন হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিষয়ে, যিনি আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের নবম বার্ষিকী উপলক্ষে ১৮০টি দেশের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন। এখানে ফ্রিডম প্লাজায় শত শত ভারতীয়-আমেরিকান সদস্যরা তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তার যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে অজিত দোভাল বলেছিলেন, প্রতিবেশীদের ব্যাপারে অন্য দেশের এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া উচিত হবে না, যা ভারতের জাতীয় স্বার্থে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় দৈনিক তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করে, এমন কিছু করা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নয়।
[201777]
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার শাসনামল, তখন ১০ ট্রাক অস্ত্র ভারতের আসামের সন্ত্রাসী সংগঠন উলফার কাছে পাচার হওয়ার পথে ছিল। এটা ছিল নিরাপত্তা নিয়ে মুখ্য বিষয়। এ ব্যাপারে প্যাটেলের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে প্যাটেল বলেন, এ বিষয়ে তিনি দুটি কথা বলবেন। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ও ক্ষেত্রসমূহে যুক্ত হতে এবং পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। তবে তিনি এ কথাও বলেন যে, বিষয়টি যেহেতু ওই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেক্ষেত্রে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
[201770]
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা সম্মিলিতভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করি এবং উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, স্থিতিশীল ও অভিঘাত সহনশীল বিশ্ব ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ) প্রতিষ্ঠায় কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের ভারতের অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই আমরা।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে ৭৫ কংগ্রেস সদস্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী মোদির বিষয়ে এই মার্কিন আইনপ্রণেতারা চিঠি লিখেছেন। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে লিখেছেন। তিনি (মোদি) মুসলমানদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, বিশেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, সে বিষয়ে তারা লিখেছেন। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে এ নিয়ে কখনো নিন্দা জানাতে তিনি (প্রশ্নকারী) শোনেননি।
জবাবে প্যাটেল বলেন, তারা বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে আসছেন। তারা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলেন। তারা নিয়মিতভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা, বিশ্বাসের স্বাধীনতাসহ যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার-সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে উচ্চপর্যায়ে কথা বলে থাকেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাভাবিক অংশীদার হিসেবে একটি সুরক্ষিত, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও বহুত্ববাদী ভারতের কথা ভাবনায় রাখেন। ভারতীয় অংশীদারদের দৃষ্টিভঙ্গিও এমনটাই বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।
মোদির বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র সফরটি কীভাবে অতীতের সফরগুলোর চেয়ে ভিন্ন, সেই প্রশ্ন প্রেস ব্রিফিংয়ে করা হয়।
জবাবে প্যাটেল বলেন, এটি রাষ্ট্রীয় সফর। তাই আগের দ্বিপক্ষীয় সফরগুলোর চেয়ে এই সফর একটু ভিন্ন। তবে সত্যিকার অর্থে, এই সফরকে অন্যান্য সফরের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। এটি ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও গভীর, প্রসারিত ও শক্তিশালী করার সফর।
সোনালীনিউজ/আইএ