ঢাকা: ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একটি সড়কে থামতে বলার নির্দেশ দেওয়ার পরও এক কিশোর গাড়ি না থামানোয় তাকে গুলি করেছে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ কিশোর পরে মারা যায়। এ ঘটনায় উত্তাল প্যারিস।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি গাড়ির চালকের দিকে বন্দুক তাক করে আছেন। তারপরই গুলির শব্দ শোনা যায় এবং গাড়িটি থেমে যায়।
নেইল এম নামে ১৭ বছর বয়সের এই কিশোর ওই গাড়িটি চালাচ্ছিল। গুলিটি তার বুকে বিদ্ধ হয়। জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার পরও ওই কিশোরকে বাঁচানো যায়নি।
এদিকে, ওই কিশোরকে গুলি করা পুলিশ কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে ওঠা নরহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ ঘটনায় প্যারিসের পশ্চিমের নঁতের এলাকায় রাতভর দফায় দফায় বিক্ষোভ চলে। পুরো এলাকায় চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে প্রায় ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ফ্রান্সে এ বছর সড়কে গাড়ি থামাতে বলার নির্দেশ দেওয়ার পরও না থামানোয় পুলিশের চালককে গুলি করে হত্যার দ্বিতীয় ঘটনা এটি। গত বছর এ ধরণের ঘটনায় রেকর্ড ১৩ জন নিহত হন।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে পুলিশ দাবি করেছে, কিশোর ওই চালক তাদের আঘাত করার উদ্দেশেই গাড়ি নিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।
[202076]
যদিও কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের অনুসন্ধানে ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। গাড়িতে ওই সময় আরো দুই কিশোর ছিল। তাদের একজন পালিয়ে গেছে এবং অন্যজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ডাস্টবিনেও আগুন দেওয়া হয়েছে। একাধিক বাস স্টপেজে ভাংচুরও চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
যে পুলিশ স্টেশনের অধীনে এ ঘটনা ঘটেছে সেটির কাছে আতশবাজি ফুটিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীদের অনেকে রাতভর সড়ক অবরোধ করে বসে ছিল বলেও জানায় বিবিসি।
আরো বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ দ্বিমুখী তদন্ত করছে। একদিকে পুলিশ ওই কিশোরকে বিনা কারণে হত্যা করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, পুলিশের থামতে বলার নির্দেশে সাড়া দিতে ওই কিশোর ব্যর্থ হয়েছে কিনা এবং পুলিশের দাবি মতে সে আসলেই তাদের চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
প্যারিসের পুলিশ প্রধান লুহন নিয়েজ ফ্রান্সের টেলিভিশন স্টেশন বিএফএমটিভি কে বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তার কার্যক্রম নিয়ে ‘প্রশ্নে উঠেছে’। তবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা হয়তো হুমকির সম্মুখীন হয়েছিলেন বলেও ধারণা প্রকাশ করেন তিনি।
সোনালীনিউজ/এআর