ঢাকা : মস্কোর বাণিজ্যিক এলাকায় আবার ড্রোন হামলা হয়েছে বলে বুধবার (২৩ আগস্ট) জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে পর পর ছয় দিন ধরে রাশিয়ার রাজধানী এলাকায় এমন হামলার খবর পাওয়া গেল। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাব হিসেবে কিয়েভ এমন পাল্টা হামলা চালাচ্ছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে ইউক্রেন সরাসরি সে বিষয়ে মন্তব্য করছে না।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বুধবার দুটি ড্রোন ধ্বংস করেছে। তৃতীয়টি ‘চাপের মুখে’ ক্রেমলিনের পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে একটি ভবনে আছড়ে পড়েছে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই। রাশিয়ার ইজভেস্তিয়া সংবাদপত্র টেলিগ্রাম চ্যানেলে সেই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।
রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনের প্রতিরোধের অধিকার সম্পর্কে পশ্চিমাদের কোনও সংশয় না থাকলেও সরাসরি রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলার বিষয়ে অস্বস্তি কাজ করছে। তবে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে খোলাখুলি ইউক্রেনের এই পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
তার মতে, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আক্রান্ত দেশ হিসেবে ইউক্রেন আত্মরক্ষার তাগিদে এমন হামলা চালাতেই পারে। রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনের নিরীহ মানুষ, অবকাঠামো থেকে শুরু করে শস্যভাণ্ডারের ওপর ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, বেয়ারবক সেই পদক্ষেপেরও নিন্দা করেন।
মার্কিন প্রশাসন অবশ্য রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেনের হামলা সম্পর্কে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মোটেই এই কাজে উৎসাহ বা মদত দিচ্ছে না। তবে রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে কীভাবে প্রতিরোধ করবে, সেই সিদ্ধান্ত একমাত্র ইউক্রেনই নিতে পারে।
তার মতে, যে কোনও মুহূর্তে ইউক্রেন থেকে সরে গিয়ে রাশিয়া এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে। উল্লেখ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রাশিয়ার হামলার মুখে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে বিশাল সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে আসছে। ন্যাটো ও অন্যান্য কাঠামোর মধ্যে সে দেশের জন্য সমর্থন ও সহায়তার ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
কৃষ্ণ সাগরেও রাশিয়া এবং ইউক্রেনের জোরালো সংঘাত ঘটছে। মঙ্গলবার রাশিয়া দাবি করে, সে দেশের সামরিক বাহিনী ইউক্রেনের দুটি সামরিক নৌকা ধ্বংস করেছে। একটিতে ইউক্রেনীয় সৈন্যও ছিল। যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে দুটি ড্রোন অকেজো করা হয়েছে বলেও মস্কো দাবি করছে।
কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার অবরোধ সত্ত্বেও এই প্রথম ইউক্রেন থেকে একটি পণ্যবাহী বেসামরিক জাহাজ সম্প্রতি ইস্তানবুলে পৌঁছানোর পর সংঘাত আরও জোরালো হচ্ছে। গত জুলাই মাসে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় খাদ্যশস্য রপ্তানি সংক্রান্ত চুক্তি থেকে রাশিয়া সরে আসার পর গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে
এমটিআই