ঢাকা: এখন পর্যন্ত কিয়েভকে ৪৪.৪ বিলিয়ন সামরিক সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি
রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত ৪৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কিয়েভকে ৪৪.৪ বিলিয়ন সামরিক সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
আনাদুলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, এসব সহায়তার উল্লেখযোগ্য অংশ বিশেষ করে ৪৩.৭ বিলিয়ন ডলার ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিতরণ করা শুরু হয়। এভাবে ইউক্রেনকে প্রায় ৪৪.৪ বিলিয়ন ডলার দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
আনাদোলু এজেন্সি এভাবেই তাদের প্রতিবেদনে ইউক্রেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো সামরিক সরঞ্জাম, সরবরাহ এবং আর্থিক সহায়তার সর্বশেষ বিবরণ দিয়েছে।
তবে ইউক্রেনে পরিচালিত বৈশ্বিক সাহায্যের তথ্য সংগ্রহে বিশেষজ্ঞ জার্মানিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিয়েল ইন্সটিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমি জানিয়েছে, ‘সংঘাত শুরু থেকে ইউক্রেনকে প্রায় ৭৬ বিলিয়ন ডলার মানবিক, আর্থিক এবং সামরিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) জানিয়েছে, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে মানবিক সহায়তার জন্য ২.৬ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে তাদের আর্থিক সহায়তার মূল্য সম্পর্কে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি প্রকাশ করেনি। তবে কিয়েল ইনস্টিটিউট অনুমান করেছে যে এই সহায়তার মোট পরিমাণ প্রায় ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করলে অর্থ, সমরাস্ত্রসহ নানা দিক দিয়ে সহায়তার হাত বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। সংঘাত শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ইউক্রেনে প্রথম সামরিক সহায়তা প্যাকেজ পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ শুরুর একদিন পরে রাষ্ট্রপতি বাইডেন ৩৫০ মিলিয়ন সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছিলেন।
পেন্টাগনের মতে, ‘ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইন ডিফেন্ডারদের’ জন্য এতে ছোট অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাশাপাশি অ্যান্টি-আরমার সিস্টেম এবং সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত ছিল।
২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল লিখিত বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সহায়তার জন্য ইউক্রেনকে অতিরিক্ত ৮০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দেন।
রাশিয়া ২০২২ সালের জুলাইয়ে ইউক্রেনের স্কুল এবং হাসপাতালের মতো অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা শুরু করলে পেন্টাগন উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ ইউক্রেনের নিরাপত্তা সহায়তার জন্য অতিরিক্ত ৮২০ মিলিন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে দুটি ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম (NASAMS), ১৫ হাজার রাউন্ড অফ ১৫৫ এমএম আর্টিলারি গোলাবারুদ এবং চারটি অতিরিক্ত কাউন্টার-ব্যাটারি ফায়ার-ট্র্যাকিং রাডার। এটি ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষার জন্য তার প্রথম NASAMS সিস্টেমের অধিগ্রহণকে চিহ্নিত করেছে।
পেন্টাগনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আনাদোলু জানিয়েছে, সংঘাতের প্রথম বছরে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে প্রায় ২৯.৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। এই সহায়তার মধ্যে রয়েছে ৩০০ মিলিয়ন রাউন্ড ছোট অস্ত্র গোলাবারুদ এবং গ্রেনেড, ১২টি NASAMS সিস্টেম, প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, HAWK এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং মিসাইল, ১৯৮ M777 হাউইটজার আর্টিলারি টুকরো, দুই মিলিয়ন রাউন্ডের ১৫৫ মিমি আর্টিলারি অ্যাম্যুনিশন, অ্যাম্বুশ প্রোটেক্টেড (MRAP) যানবাহন এবং ১৮৬ ব্র্যাডলি সাঁজোয়া পদাতিক যুদ্ধের যান।
এছাড়াও ইউক্রেনকে ২০টি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার, ৪৫টি টি-৭২বি ট্যাঙ্ক, হাই-স্পিড অ্যান্টি-রেডিয়েশন মিসাইল (HARM) এবং দুই হাজারের বেশি হাই মোবিলিটি মাল্টিপারপাস হুইলড ভেহিকেল (HMMWVs) সরবরাহ করেছে।
এমএস