সর্বোচ্চ সতর্কতা

মোদির মন্ত্রিসভায় কারা আসছেন?

  • সোনালীনিউজ ডেস্ক  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৪, ১০:০২ এএম

ঢাকা: ভারতে টানা দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকার পর নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোট তৃতীয়বার ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে। তবে গত দুইবারের চেয়ে এবারের ক্ষমতা যাওয়ার পদ্ধতিটা ভিন্ন। ভূমিধস বিজয়ে দুইবার সরকার গঠন করতে পারলেও এবার বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে শরিকদের কৃপা নিয়ে সরকার গঠন করতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে।

সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় শরিকদের চাহিদাও অনেক। তা মেটাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া মোদিকে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় চেয়েছে শরিক দলগুলো। তবে বিজেপি শরিকদের সন্তুষ্ট রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা চালালেও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নিজেদের ভাগেই রাখছে।

রবিবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদি। তার সঙ্গে মন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন কমপক্ষে ৩০ জন নির্বাচিত এমপি। এর মধ্যে বিজেপি এমপিই বেশি।

[225209]

টিভি নাইন বাংলার খবরে বলা হয়, জানা গিয়েছে, আজ প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদি শপথ নিলেও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার শপথ কয়েক দিন পর হবে। তবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রী পদে আজই শপথ গ্রহণ হবে। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি আজ ৩০ জন মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন। এর মধ্যে বিজেপির মন্ত্রীদের সংখ্যাই বেশি হবে। শরিকি দলগুলোর কয়েকজন সাংসদও শপথ নিতে পারেন।

আজ সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। যে মন্ত্রীরা আজ শপথ নেবেন, তাদের আজ সকালেই ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হবে।

সূত্রের খবর, শরিকরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দাবি জানালেও, গুরুত্বপূর্ণ চার মন্ত্রণালয়- স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজেপি নিজের হাতেই রাখছে। আজই এই পদের মন্ত্রীরা শপথ নিতে পারেন। পাশাপাশি রেল, শিক্ষা, সড়ক ও পরিবহন, আইন, তথ্যপ্রযুক্তি, স্টিল, কয়লা ও অসামরিক উড়ান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও বিজেপি নিজের হাতে রাখবে। এই মন্ত্রীরাও আজ শপথ নেবেন।

ভারতের গণমাধ্যমটি জানায়, সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, এবার পূর্ণ মন্ত্রিসভার সংখ্যা ৭৮ থেকে ৮১ হতে পারে। এবারের মন্ত্রিসভায় খুব কমসংখ্যক মন্ত্রীকেই একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

ভারতীয় গণমাধ্যম আজতকের খবরে বলা হয়, অমিত শাহ ও রাজনাথ সিংয়ের মতো সিনিয়র বিজেপি নেতারা মন্ত্রিপরিষদে থাকছেন। এছাড়াও দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা, তেলেগু দেশম পার্টির এন চন্দ্রবাবু নাইডু, জেডিইউ-র নীতীশ কুমার এবং শিবসেনার একনাথ শিন্ডেসহ অন্যরা আলোচনায় আছেন।

জনশক্তি পার্টির (রাম বিলাস) চিরাগ পাসওয়ানদের নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। অনেকেই বলছেন, তাদের এবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দেওয়া হতে পারে। জেডিইউ কোটা থেকে লালন সিং বা সঞ্জয় ঝাকে স্থান দেওয়া হবে সূত্রের খবর। যদিও এই বিষয়ে এখনো কোনো অফিসিয়াল ঘোষণা করা হয়নি।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রের খবর, ক্যাবিনেট মন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন ১৯-২২ জন, প্রতিমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন ৩৩-৩৫ জন। সূত্রের খবর, একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও দুইজন প্রতিমন্ত্রী পেতে পারে টিডিপি। জেডিইউ পেতে পারে একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী। একনাথ শিণ্ডের শিবসেনা, এলজেপি থেকেও একজন করে মন্ত্রী হতে পারেন। এছাড়া আরএলডি, অজিত পাওয়ারের এনসিপি থেকে একজন করে মন্ত্রী হতে পারেন।

উত্তরপ্রদেশ থেকে মন্ত্রী হতে পারেন রাজনাথ সিংহ, কংগ্রেস থেকে আসা জিতিন প্রসাদ। মধ্যপ্রদেশ থেকে মন্ত্রী হতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, শিবরাজ সিংহ চৌহান। মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। ফের মন্ত্রী হতে পারেন ভূপেন্দ্র যাদব, অর্জুনরাম মেঘওয়াল। এছাড়া এস জয়শঙ্কর, অশ্বিনী বৈষ্ণব, নিতিন গডকড়ী, পীযূষ গোয়েলরা মন্ত্রিপরিষদে থাকতে পারেন।

গতকাল শনিবার (৮ জুন) বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) শরিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই মন্ত্রণালয়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

[225231]

১৮তম লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯৩ আসন এবং ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩২ আসন। এছাড়া অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মিলে পেয়েছে ১৮ আসন। এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে বিজেপি। দলটির দখলে গেছে ২৪০ আসন। কিন্তু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার গঠনে জোটের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে মোদিকে। জোটসঙ্গী দলগুলোর মধ্যে তেলেগু দেশাম পার্টি পেয়েছে ১৬ এবং বিহারের নীতীশ কুমারের দল জনতা দল (ইউনাইটেড) পেয়েছে ১২ আসন। যদি টিডিপি, জেডইউর এই শরিক দল বেঁকে বসে, তাহলে চাপে পড়বেন মোদি। তাই তারা যেন জোট ছেড়ে বেরিয়ে না যায়, তা নিয়ে তৎপর বিজেপি।

শোনা যাচ্ছে, চন্দ্রবাবু নাইডু, নীতীশরা ইতোমধ্যেই নিজেদের শর্ত জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বকে। তারা কে কোন মন্ত্রণালয় চান বা রাজ্যের জন্য কে কী সুবিধা চাইছেন— তার তালিকা জমা করেছেন। মৌখিক আলোচনাও হয়েছে।

এমএস